গৃহবধূ বৃষ্টি সাহা হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে কুমিল্লার মুরাদনগর-ঢাকা সড়কের ছালিয়াকান্দি বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা।
আজ শুক্রবার সকালে সড়ক অবরোধের ফলে ওই সড়কে ঘণ্টাব্যাপী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে ইউপি চেয়ারম্যান আবু মুছা সরকারের সভাপতিত্বে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন বৃষ্টি সাহার বাবা ব্যবসায়ী শ্যামল চন্দ্র চৌধুরী, সমাজসেবক রমনী মোহন দাস, ব্যবসায়ী আউয়াল সরকার, হারুনুর রশীদ মুন্সী, বশীর আহাম্মদ, শামীম সরকার।
ব্যবসায়ী ছোটন কুমার সাহার আয়োজনে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন সমাজ সেবক প্রফেসার নারায়ন চন্দ্র সহা, জাকির হোসেন রানা, ছালিয়াকান্দি বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলম মিয়া, কোষাধ্যক্ষ শাহজাহান মিয়া, ইউপি সদস্য মজিবুর রহমান, সুভাস চন্দ্র সাহা, দিদার হোসেন, মাসুম মিয়া, হোসেনেয়ারা আক্তার বেবী, কামাল উদ্দিন, তৌহিদ মিয়া, সাবেক মেম্বার সফিকুল ইসলাম ভুইয়া প্রমুখ।
বক্তারা উক্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতারপূর্বক ফাঁসির দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্টমন্ত্রীসহ পুলিশ প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে।
উল্লেখ্য, মুরাদনগর উপজেলার ছালিয়াকান্দি গ্রামের শ্যামল চন্দ্র চৌধুরীর মেয়ে বৃষ্টি সাহার সাথে দুই বছর পূর্বে নারায়নগঞ্জ শহরের টানবাজার সাহাপাড়া এলাকার সুভাষ চন্দ্র রায়ের ছেলে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের কর্মকর্তা সুদীপ কুমার রায়ের বিয়ে হয়। মেয়ের সুখের কথা ভেবে বিয়ের সময় নগদ ১৫ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণালংকার যৌতুক দেওয়া হয়।
কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকের জন্য বৃষ্টিকে অত্যাচার নির্যাতন শুরু করলে বেশ কয়েকবার বিচার ও সালিশ করে বিষয়টি সমাধান করা হয়। এরমধ্যে তাদের কোলজোড়ে আসে আরজু সাহা নামে একটি ছেলে সন্তান।
গত ১২ এপ্রিল শুক্রবার সকালে স্বামী সুদীপ কুমার রায়, শ্বশুর সুভাষ চন্দ্র রায়, শাশুড়ি শিপ্রা রানী রায় ও ননদ ডেইজী সাহা মিলে বৃষ্টিকে পুনরায় যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। যৌতুক আনতে রাজি না হওয়ায় তাকে অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে বাসার দরজা বন্ধ করে রাখে। ওইদিন বিকেলে বৃষ্টিকে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে নারায়নগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এ ঘটনায় বৃষ্টির ভাই মিঠুন চৌধুরী বাদী হয়ে নারায়নগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করলে পুলিশ ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের কর্মকর্তা স্বামী সুদীপ কুমার রায়, স্বশুর সুভাষ চন্দ্র রায় ও ননদ ডেইজী সাহাকে গ্রেফতার করে। কিন্তু স্বামী ও স্বশুরকে জেল-হাজতে প্রেরণ করলেও পুলিশ ননদ ডেইজী সাহাকে ছেড়ে দেয়। বর্তমানে উক্ত হত্যা মামলাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।