Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আত্রাইয়ে বাড়ছে 'আলোক ফাঁদ' পদ্ধতি, কমছে কীটনাশকের ব্যবহার

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ১২:২৩ PM
আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ১২:২৪ PM

bdmorning Image Preview


নওগাঁর আত্রাই উপজেলার কৃষকদের কাছে ফসলে আক্রান্ত পোকা-মাকড় চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জনপ্রিয় একটি পদ্ধতির নাম আলোক ফাঁদ পদ্ধতি। দিন দিন উপজেলার কৃষকরা এই কৃষিবান্ধব পদ্ধতির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।  

আলোক ফাঁদ পদ্ধতিটি হচ্ছে রাতের বেলায় খেতে বৈদ্যুতিক বাল্ব টাঙানো হয়। বাল্বের নিচে পাত্র রাখা হয়। ওই পাত্রের মধ্যে ডিটারজেন্ট বা কেরোসিনমিশ্রিত পানি থাকে। আকৃষ্ট হয়ে পোকামাকড় আলোর কাছে আসে এবং পাত্রের পানির মধ্যে পড়ে মারা যায়। ওই পোকামাকড় দেখে ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়।

বর্তমানে উপজেলার ৮ইউনিয়নের ২৪টি ব্লকে উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতায় সন্ধ্যায় ফসলের ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের উপস্থিতি যাচাইয়ের জন্য এই আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিটি বর্তমানে উপজেলার কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ইরি-বোরো ধানের ক্ষেতের আইলে কোথাও পানি ভর্তি পাত্রে, কোথাও কাগজের উপর আলো জ্বেলে ধানে আক্রমণাত্মক বিভিন্ন পোকা ধরছেন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা নিজেই তাদের আমন ক্ষেতে কোন ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে তা স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার সহযোগিতায় প্রয়োগ করতে পারছেন। এতে করে পোকার আক্রমণের আগেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারছেন উপজেলার কৃষকরা। 

এই আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে এলাকার অনেক কৃষক বর্তমানে খুব কম ওষুধ ব্যবহার করছেন। এতে কৃষকদের খরচ অনেকটাই কমে আসছে এবং ধানের উৎপাদনের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এবার ইরি-বোরো ধান ও অন্যান্য ফসল উৎপাদনে কৃষক লাভবান হবে বলে আশা করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।  

উপজেলার বজ্রপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ মন্ডল বলেন, এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অনেক উপকৃত হয়েছি। সহজলভ্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করে তারা খুব সহজেই ক্ষেতের পোকামাকড়গুলো নিধন করতে পারছেন। পোকামাকড়গুলোর উপস্থিতি চিহ্নিত করে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছেন। এতে করে তাদের খরচ অনেকটাই কমে এসেছে। এটা পরিবেশ বান্ধব একটি পদ্ধতি।

এ ব্যাপারে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা  কেরামত আলী জানান, উপজেলার কৃষক সহজলভ্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করে তারা খুব সহজেই ক্ষেতের পোকামাকড়গুলো নিধন করতে পারছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের অনুপ্রেরণায় কৃষকরা বর্তমানে এই “আলোক ফাঁদ” পদ্ধতির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা সহজেই ইরি-বোরো ধানের শত্রু বিভিন্ন পোকা নিধন করতে পারছেন। এতে করে আমন ক্ষেত পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে। এটি একটি পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি। 

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কে এম কাউছার হোসেন জানান, এটি একটি সহজলভ্য পদ্ধতি। উপজেলার কৃষকরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব সহজেই ধানের ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেন। কৃষকরা যদি এই পদ্ধতিটি ইরি-বোরো মৌসুমে অব্যাহত রাখেন তাহলে একদিকে তাদের ধান উৎপাদনে খরচ কম হবে এবং অপরদিকে ধানের উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পাবে। 

Bootstrap Image Preview