লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার পূর্ব নওদাবাস গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে জাকির হোসেন। তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে ২০০৩ সালে এমএ পাস করেন। চাকরি না পেয়ে বেকার জীবন পার করছিলেন। পরে ২০১৩ সালে ঢাকায় যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পোল্ট্রি ফামের ওপর ৭৫ দিনের প্রশিক্ষণ নেন তিনি। আর সেখান থেকে এসেই বাবার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে পোল্ট্রি ফার্ম গড়ে তোলেন। ওই পোল্ট্রি ফার্মেই তার ভাগ্য বদলে যায়।
এই পোল্ট্রি ফার্ম শুধু তার বেকারত্ব দূর নয়, পাশাপাশি ১০ জন শ্রমিকেরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে সেখানে। এখন তিনি স্বাবলম্বী। তার এ সাফল্য স্থানীয় বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দেখাচ্ছে। তার ফার্মের নাম নুবা পোল্ট্রি ফার্ম।
ফার্মের উদ্যোক্তা জাকির হোসেন বলেন, ২০০৩ সালে ইতিহাস বিভাগে কারমাইকেল কলেজ থেকে এমএ পাস করে চাকরি না পেয়ে বেকার জীবন পার করছিলাম। এতে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। অবশেষে ২০১৩ সালে যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে পোল্ট্রি ফার্মের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি।
তিনি আরো বলেন, এরপর আমার বাবার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে নুবা পোল্ট্রি ফার্ম স্থাপন করি। শুরুতে ৫শ' লেয়ার মুরগি দিয়ে যাত্রা শুরু হয় আমার। এরপর যুব উন্নয়ন অধিদপফতর থেকে ঋণ হিসেবে ৫০ হাজার ও বাড়ি থেকে আরো ১ লাখ টাকা দিয়ে ফার্মের আকার সম্প্রসারণ করি। ফার্মটি বর্তমানে ১ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে আমার ফার্মে ১০ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করে। ওই ফার্মে এখন ৫ হাজার লেয়ার মুরগি রয়েছে। প্রতিদিন ৪ হাজার ডিম আসে।
জাকির হোসেন আরো জানান, প্রতিদিন অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক আসে আমার কাছে। আমি তাদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে থাকি। তাদের বোঝায় শুধু সরকারি চাকরির আশায় বসে না থেকে নিজে নিজের কর্মসংস্থান করা যায়। বেকারত্ব যে অভিশপ্ত, তা আমরা একটু চেষ্টা করলে দূর করতে পারি। তাই শিক্ষিত বেকারদের প্রতি আমার অনুরোধ অযথা সরকারি চাকরির পেছনে ঘুরে জীবন নষ্ট করার চেয়ে সামন্য পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করা উচিত।
স্থানীয় বাসিন্দা মিলন জানান, জাকির হোসেনের ফার্মটি বেকার যুবকের জন্য আশার আলো হয়ে উঠেছে। তার দেখাদেখি বেকার যুবকরা উৎসাহিত হচ্ছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার নওদাবাস ইউপি চেয়ারম্যান অশ্বিনী কুমার বসুমিয়া বলেন, জাকির হোসেনের নুবা পোল্ট্রি ফার্ম বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।