Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

বন্ধুদের একজন বাহিরে গেলে অন্যজন আসত এভাবেই রাত পর্যন্ত চলে ধর্ষণ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ এপ্রিল ২০১৯, ০৫:০৭ PM
আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৯, ০৫:০৭ PM

bdmorning Image Preview


মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মাদ্রাসার দুই ছাত্রীকে দু”দিন আটকে রেখে গণধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা যায়, পাশের এলাকার আটিপাড়া গ্রামের সাকিব ও হৃদয় তাদের ৩-৪ জন বন্ধুরা মিলে এই কাজ করেছে।

বখাটের পরিবার এলাকার প্রভাশালী ও সাকিব সাবেক ইউপি মেম্বারের ছেলে তাই টাকার বিনিময় ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।

জানা যায়, গত বুধবার (৩ এপ্রিল) সকাল থেকে তাদের দুই মেয়ে মাদ্রাসা ৫ম ও ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ। অনেক খোজাখুজি করার পর বৃহস্পতিবার রাতে ভাঙ্গাব্রীজ নামক স্থানে ইতালি প্রবাসী মাহবুব সর্দারের বিলাশবহুল বাড়ীতে তালাবদ্ধ অবস্থায় দুই মেয়েসহ বালীগ্রাম ইউনিয়ের আটিপাড়া গ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বার মজিবর হাওলাদের ছেলে সাকিব ও একই এলাকার হৃদয়, আলামিন, শাওনসহ ৪-৫ জনকে আটক করে এলাকাবাসী। তবে পুলিশকে বিষয়টি জানালেও তারা দেরি করায় একই এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান মতিন মো্লৈাসহ এলাকার প্রভাবশালীদের নিয়ে টাকার বিনিময় ধ্মাচাপা দেয়া চেষ্টা চালায়।

মেয়ে পক্ষ এতে রাজী না হওয়া শুক্রবার বিষয়টি জানাজানি হলে ডাসার থানার পুলিশ এসে দুটি মেয়ের একটি মেয়ে ও তার বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিকালে থানায় নিয়ে যায়।

ভিকটিম একজন মাদ্রাসার ছাত্রী বলেন, আমার সাথে সাকিবের প্রেম ও আমার বান্ধবীর সাথে হৃদয় নামে আর একটি ছেলের প্রেম ছিল সেই কারণে আমাদের মাদ্রাসা থেকে ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে মাদারীপুরের বিভিন্নস্থান ঘুরায়। পরে বিবাহ করার প্রলোভন দেখিয়ে রাতে আটকে রেখে শারিরিক মেলামেশা করছে। আমরা চলে আসতে চাইলেও আমাদের নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। ওদের বন্ধুরা জোর করে শারিরিক সম্পর্ক করেছে। আমরা অসুস্থ থাকায় কিছু বলার ক্ষমতা ছিল না। এরপর পরের দিন আমাদের দুজনকে একই ঘরে আটকে রেখে একজন বাহিরে যেত কিছুক্ষন পর আর একজন আসত এভাবেই রাত পযন্ত আমরা ঐখানে ছিলাম। পরে এলাকার লোকজন আমাদের উদ্ধার করে।

মেয়েটি আরো বলেন, আমার সাথে সাকিবের প্রেম ছিল। সে আমাকে বিয়ে করবে বলে আমার সর্বনাশ করেছে, আমি ওকেই বিয়ে করতে চাই।

বতলা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আবু আলেম জানান, এরা দুইজন বুধবার সকাল দশটার দিকে বইখাতা রেখে পালিয়েছে। এরপর আর এদের খোজ পাওয়া যায়নি। এখনতো বাড়িতে এসে জানতে পারলাম এই ঘটনা।

বালীগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মতিন মোল্লা জানান, আমার কাছে আসার পর সঠিক তথ্য চেয়ে সময় বেধে দিয়েছিলাম। তারা আর আমার কাছে কোন তথ্য নিয়ে আসেন নাই। আমরা কোন শালিশ করি নাই।

অভিযুক্ত সাকিবের বাবার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সাকিবের মা বলছে আমাদের অনেক শত্রু আছে তারা এগুলো করছে। আমার ছেলে দুদিন রাতে বাড়ীতে ছিল। তাছাড়া তার বন্ধুরা তাকে ডেকে নিয়েছে।

মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালাদার বলেন, আমরা একটি মেয়ে ও তার বাবা মামলা করার জন্য নিয়ে আসছি। প্রয়োজনে আর একজনেরও মামলা নেয়া হবে। আমরা চেষ্টা করবো মেয়ে দুটি যাতে তাদের উপযুক্ত বিচার পায় সেই ব্যবস্থা করবো। তাছাড়া যারা শালিশ করছে তাদের বিরুদ্ধও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নির্যাতিত কিশোরীদের স্বজনেরা এর উপযুক্ত বিচারের দাবী জানিয়েছে। তারা বলেন, আমরা গরিব অসহায় মানুষ। নুন আনতে পান্তা ফুরায়, এই মেয়েটিকে তো বিবাহ দিতে হবে, কে এই অবস্থায় বিয়ে করবে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি একটি সুন্দর বিচার।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত সকলকে দ্রুত গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি দেয়া হোক এবং এরকম ঘটনা যাতে পুণরায় না ঘটে এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

Bootstrap Image Preview