মৌলভীবাজারের শেরপুরে ভাড়া নিয়ে বাক বিতণ্ডার জেরে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ওয়াসিম হাফনানকে বাস থেকে ফেলে হত্যা করা হয় বলে দায় স্বীকার করেছে ওই বাসের চালক ও হেলপার।
রোববার সকালে গাড়িচালক জুয়েল আহমদকে সিলেট ও সহকারী মাসুদ মিয়াকে সুনামগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার দায় স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃতরা। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে তাদের।
মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি মো. সোহেল আহম্মদ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে আদালতে প্রেরণ করার পর আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করব।
মামলা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, দাফন শেষে পরিবারে সদস্যরা মামলা করবে।
এদিকে আজ রবিবার (২৪ মার্চ) সকাল থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করেন। এদিকে সকাল ১১টার দিকে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ওয়াসিমের সহপাঠীরা। পরে তারা নগরীর চৌহাট্টায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
ওই সময় তারা, দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পিত হত্যাকান্ড, ওয়াসিম হত্যার বিচার চাই, আমার ভাই মরলো কেনো, বিচার চাই, নিরাপদ সড়ক চাই’এমন নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
এছাড়া বাসের সেই ঘাতক চালক ও হেলপারের অল্প সময়ের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর, ঘাতক (উদার) পরিবহন বাসের রুট পারমিট ও লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানান। একই সাথে হত্যার বিচারের দাবিতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরণের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, শনিবার বিকেলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শেরপুর নামক স্থানে প্রথমে বাসের হেলপার ধাক্কা দিয়ে সড়কে ফেলে দিয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওয়াসিম আফনানকে। পরবর্তীতে ওই বাসের চাকায় চাপা দিয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়।
সে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলাস্থ দেবপাড়া ইউনিয়নের রুদ্র গ্রামের মো. আবু জাহেদ মাহবুব ও মা ডা. মীনা পারভিন দম্পতির ছেলে।
ঘটনার পর বাসটিকে ধাওয়া করে ওসমানী নগরের বেগমগঞ্জ থেকে আটক করে পুলিশ। এ সময় বাস চালক ও হেলপার পালিয়ে গেলেও শনিবার রাত ১১টার দিকে পুলিশ বাসচালক জুয়েল আহমদকে দক্ষিণ সুরমার বাস টার্মিনাল থেকে আটক করে। এরপর রাত ১টার দিকে হেলপার মাসুক আলীকেও সুনামগঞ্জের ছাতকে আটক করে পুলিশ।