Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

রজব মাসের আমল

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ মার্চ ২০১৯, ১০:৩৯ AM
আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৯, ১০:৪০ AM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী ছবি


আরবি মাসগুলোর মধ্যে একটি বিশেষ ও মহিমান্বিত মাসের নাম রজব। এ মাসের বড় বৈশিষ্ট্য হলো এ মাস আল্লাহ প্রদত্ত চারটি সম্মানিত মাসের একটি। রাসুল (সা.) এ মাস সম্পর্কে খুবই গুরুত্ব দিতেন। ফলে রজবের চাঁদ দেখা গেলেই তিনি কিছু বিশেষ আমল শুরু করতেন। এই ব্যাপারে হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত আনাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, যখন রজব মাস শুরু হত, নবী করিম (সা.) তখন এ দোয়াটি পড়তেন—‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রমাদান। 

অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত হায়াত বৃদ্ধি করে দিন।’ (আলমুজামুল আওসাত, হাদিস: ৩৯৩৯)

রজবের প্রথম রাতে দোয়া কবুল হয়: পবিত্র হাদিস শরিফে রজবের প্রথম রাতে দোয়া কবুল হওয়ার সুসংবাদ এসেছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘পাঁচটি রাত এমন আছে, যেগুলোতে বান্দার দোয়া আল্লাহ তাআলা ফিরিয়ে দেন না, অর্থাৎ অবশ্যই কবুল করেন। রাতগুলো হলো—জুমার রাত, রজবের প্রথম রাত, শাবানের ১৫ তারিখের রাত, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার রাত।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৯২৭)

রজব মাসের রোজা

রজব মাসে রোজা রাখার ভিন্ন কোনো ফজিলত নেই। তবে হ্যাঁ, এমনিতেই নফল রোজা রাখা অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল। প্রখ্যাত মুহাদ্দিস হাকেম ইবনে হাজার (রহ.) লিখেছেন, বিশেষভাবে রজব মাসে রোজার ফজিলত সম্পর্কে সহিহ ও আমলযোগ্য কোনো হাদিস নেই। (তাবইনুল আজার বিমা ওরাদা ফি ফজলি রজব, পৃষ্ঠা-১১)

ইসলামী শরিয়তে রোজা রাখার ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ দিনগুলো ছাড়া যেকোনো দিনই নফল রোজা রাখা যায়। এর অনেক ফজিলত রয়েছে। তবে রজবের বিশেষ রোজা হিসেবে ফজিলতপূর্ণ মনে করে রোজা রাখা সুন্নত নয়। বিশেষত, রজবের রোজাকে সুন্নত ও মুস্তাহাব মনে করে নফল রোজা রাখা ঠিক নয়।

কোনো কোনো হাদিসে আশহুরে হুরুম তথা সম্মানিত চার মাসে নফল রোজা রাখার নির্দেশ রয়েছে। তাই রজব মাসও আশহুরে হুরুমের একটি মাস হিসেবে রজব মাসের যেকোনো দিন নফল রোজা রাখলে সওয়াব পাওয়া যাবে। কিন্তু রজবের কোনো নির্দিষ্ট দিন (যেমন ২৭ তারিখ) রোজা রাখা সুন্নত কিংবা মুস্তাহাব নয়। সুতরাং ২৭ তারিখে মুস্তাহাব বা সুন্নত মনে করে রোজা রাখলে তা বিদআদ হবে।

বিদায় হজের সময় মিনা প্রান্তরে প্রদত্ত এক ভাষণে মহানবী (সা.) সম্মানিত মাসগুলোকে চিহ্নিত করেছেন। হজরত আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘বারো মাসে বছর। তার মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। তিনটি ধারাবাহিক জিলকদ, জিলহজ ও মহররম। আর চতুর্থটি হলো জুমাদাল উখরা ও শাবানের মধ্যবর্তী মাস রজব।’ (বুখারি)।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আল্লাহতায়ালা এই চার মাসের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন। এ মাসগুলোয় গুনাহের ক্ষতি অনেক বেশি। আবার নেক আমলের সওয়াবও অধিক। ইমাম জাসসাস (রহ.) ‘আহকামুল কোরআন’ গ্রন্থে বলেন, এসব মাসে ইবাদতের প্রতি যত্নবান হলে অন্য মাসগুলোয় ইবাদত করা সহজ হয়। অনুরূপ এ মাসগুলোয় গুনাহ থেকে বেঁচে থাকলে বাকি মাসগুলোয়ও গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়। তাই প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য হলো, ‘আশহুরে হুরুম’-এর সম্মান রক্ষা করা, এ মাসগুলোয় গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা এবং বেশি বেশি নফল ইবাদতে মশগুল থাকা।

Bootstrap Image Preview