Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

২৫ টাকার ইনজেকশন দিয়ে ৩ হাজার টাকা আদায়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ মার্চ ২০১৯, ১১:২৩ AM
আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯, ১১:২৪ AM

bdmorning Image Preview


বরিশালে চিকিৎসা করাতে এসে ভুয়া ডিগ্রিধারী ‘সর্বরোগের বিশেষজ্ঞ’ এক চিকিৎসকের প্রতারণার শিকার হয়েছেন ভোলার দুই রোগী। সামান্য হাতের ব্যথার জন্য আলট্রাসনোগ্রাম করানো হয়েছে এক রোগীকে। অপর রোগীকে তেমন সমস্যা না থাকলেও কিডনিতে আক্রান্ত এমন ভয় দেখিয়ে মাত্র ২৫ টাকার ইনজেকশন পুশ করে হাতিয়ে নিয়েছেন তিন হাজার টাকা।

মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে বরিশাল নগরীর জর্ডন রোডের সাউথ অ্যাপেক্স ডায়াগনস্টিক সেন্টারে (ডিজিটাল ল্যাব)। প্রতারণার প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী রোগীর পরিবার বরিশাল জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সিভিল সার্জন, ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসেসিয়েশন ও বরিশাল প্রেসক্লাবে অভিযোগ দিয়েছে।

ভুক্তভোগী রোগীর ছেলে মো. জুয়েল জানান, তার বাবা শাহজাহান মিয়া ভোলা সদর উপজেলার উত্তর দিঘলদী গ্রামের বাসিন্দা। দরিদ্র কৃষক। তিনি শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। তার চিকিৎসার জন্য ধারদেনার মাধ্যমে ১৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন। পরে শাহজাহান মিয়া ও পার্শ্ববর্তী শাহাজালাল চৌকিদারের অসুস্থ (হাতে ব্যথা) স্ত্রী শাহানুর বেগমকে নিয়ে গত মঙ্গলবার লঞ্চযোগে বরিশালে আসেন। তারা নগরীর জর্ডন রোডের সাউথ অ্যাপেক্স ডায়াগনস্টিক সেন্টারে (ডিজিটাল ল্যাব) যান।

৬০০ টাকা করে মোট ১২০০ টাকা ভিজিট পরিশোধের পর ডা. নাজমুল হোসেন রোগী শাহজাহান ও শাহানুর বেগমকে দেখেন এবং কাউন্টারে পাঠান। কাউন্টার ম্যানেজার পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য শাহজাহানের কাছ থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা নেন। শাহানুর বেগম ডান হাতে ব্যথায় ভুগছিলেন; কিন্তু চিকিৎসক তাকে আলট্রাসনোগ্রামসহ রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা দেন। এ জন্য তার কাছ থেকে নেওয়া হয় ৩ হাজার টাকা।

দুপুরে পাওয়া রিপোর্ট সবই ভালো উল্লেখ করে শাহজাহানকে ডাক্তার জানান, আপনি কিডনি রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরও জানান, এই মুহূর্তে শাহজাহানের শরীরে একটি ইনজেকশন পুশ করতে হবে, যার দাম ৩ হাজার টাকা। টাকা দেওয়ার পরই তিনি একটি ইনজেকশন পুশ করেন। এ সময় ইনজেকশনটির খালি ভায়েল সংগ্রহ করে হাতে রাখেন জুয়েল। বিকালে ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হয়ে একটি ফার্মেসিতে ওই ইনজেকশনের খালি ভায়েল নিয়ে গেলে জুয়েল জানতে পরেন- এর দাম মাত্র ২৫ টাকা। তখন তিনি বুঝতে পারেন দিনভর তাদের সাথে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ডাক্তার প্রতারণা করেছেন। সন্ধ্যার পর তিনি বরিশাল প্রেসক্লাবে গিয়ে সংবাদকর্মীদের কাছে সব ঘটনা লিখিত আকারে তুলে ধরেন।

এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন জানান, কেউ রোগীর সঙ্গে প্রতারণা করে থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়ার রহমান জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়ে বুধবার একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সংবাদকর্মীরা এ বিষয়ে ডা. নাজমুল হোসেনের কাছে জানতে চান- একজন চিকিৎসক কেন ইনজেকশন বিক্রি করবেন? এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি বলেন, রোগী সংগ্রহ করা ডায়াগনস্টিক কর্তৃপক্ষের কাজ। তারা ৬০০ টাকার ভিজিট থেকে ৩০০ টাকা রেখে দেন।

এ ছাড়া শাহানুরের হাতের ব্যথায় আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করানোর বিষয়ে তিনি কোনো উত্তর দিতে রাজি হননি।

Bootstrap Image Preview