গাজীপুরের কালীগঞ্জে আবুল বাশার শেখ (৫৪) নামের এক ইজিবাইক চালককে রহস্যজনকভাবে খুন করা হয়েছে।
ঘটনাটি রবিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের বড়হরা গ্রামে ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তবে খুনের ব্যাপারে নিহতের ছোট ভাই বুরুজ মিয়ার অভিযোগের তীর ছিল নিহতের ছেলের দিকে।
নিহত বাশার ওই গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিন শেখের ছেলে। পেশায় তিনি একজন ইজিবাইক চালক ছিলেন। এ ব্যাপারে পুলিশ নিহতের দুই ছেলে ও ছেলের বউ, মেয়ে এবং ভাতিজাকে থানায় জিজ্ঞেসাবাদ করেছে।
বুরুজ মিয়া বলছেন, তার ভাইয়ের একাধিক বিয়ের ঘটনা ছিল। তিন বছর আগে তার স্ত্রী মারা যাওয়ার ২০/২৫ দিনের মাথায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এ নিয়ে প্রথম স্ত্রীর ছেলেদের সাথে বিরোধ চলছিল। পরে সেই স্ত্রী ডিভোর্স দিয়ে চলে যাওয়ার পর পুনরায় সে তৃতীয় বিয়ে করে। তৃতীয় স্ত্রীর সাথে নানা বিষয় নিয়েও সংসারে ঝামেলা চলছিল।
তবে অভিযোগ সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ছেলেরা তাকে খুন করে থাকতে পারে। নিহতের ৫ ছেলের মধ্যে ৩ জন প্রবাসী ও ২ জন দেশে থাকে এবং ১ মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিতে পড়ে।
স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বিকেলে তিনি ইজিবাইক নিয়ে কাজের জন্য বের হন। ওইদিন তার তৃতীয় স্ত্রী বাড়িতে ছিল না। স্বামীর সাথে ঝগড়া করে ৩ দিন আগেই বাপের বাড়ি চলে যায়। তাই রাতের খাবার তার ঘরে সাজিয়ে রেখে বাড়ির লোকজন ঘুমিয়ে পড়েন। ওইদিন দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে চিৎকারের শব্দ শোনে বাড়ির লোকজন গিয়ে দেখে তিনি রক্তাক্ত জখম অবস্থায় আহত হয়ে আছেন।
পরে তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ওই হাসপাতালেই মর্গে পাঠায়।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুবকর মিয়া জানান, অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের গালে, পেটে ও পিঠে ৩টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের দুই ছেলে ও ছেলের বউ, মেয়ে এবং ভাতিজাকে থানায় জিজ্ঞেসাবাদ করা হয়েছে। বাশার খুন হয়েছে সত্যি তবে যে কারণে খুনের অভিযোগ করা হচ্ছে সেটা নাও হতে পারে। সেখানে অন্য কোন কারণও থাকতে পারে। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে দেখছে। তবে আপাতত অভিযোগ আমলে নিয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।