Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

কিভাবে অস্ত্র নিয়ে বিমানে উঠল ‘ছিনতাইকারী’?

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৯:৫১ PM
আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৯:৫১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


সাধারণত বিমানবন্দরে প্রবেশের পর থেকে বিমানে আরোহণের আগে একাধিক স্ক্যান মেশিনে নিরাপত্তা তল্লাশির পর বিমানযাত্রীদের বোর্ডিং পাস দেয়া হয়। এমন কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে কিভাবে একজন যাত্রী বিমানে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করল?

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনার পর এমন প্রশ্নই তুলছেন বিমানযাত্রীরা। যার সমাপ্তি ঘটে সেনা কমান্ডোর শ্বাসরুদ্ধকর এক অভিযানে।

প্রত্যক্ষদর্শী বিমানের একাধিক যাত্রী জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে উড়োজাহাজের ভেতর ‘জিম্মিকারী’ ব্যক্তি পিস্তল বের করে দুই রাইন্ড গুলি ছুড়ে। আর চিৎকার করে বলতে থাকেন, আমার ডিমান্ড ফুলফিল না করে বিমান অবতরণের চেষ্টা করলে বিপদ আছে। সবাইকে নিয়ে মরবেন বলেও তিনি হুমকি দেন। এ সময় যাত্রীরা ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন।

এদিকে রবিবার রাত পৌনে ৮টায় শাহ আমানত বিমানবন্দরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিমানবাহিনীর এয়ারভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, ‘সামরিক বাহিনীর যৌথ কমান্ডো অভিযানে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবস্থানরত বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছে। যাত্রী ও ক্রু সবাই সুস্থ রয়েছেন। কেউ কোনো আঘাত পায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বক্ষণিক নির্দেশনায় এ অভিযান সফলভাবে পরিচালিত হয়।’

তিনি বলেন, বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ওই ব্যক্তিকে টেলিফোনে ব্যস্ত রেখে বিশেষ কৌশলে অভিযান পরিচালিত হয়। ওই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। তিনি সুস্থ নাকি মানসিক রোগী সে সম্পর্কে তদন্ত শেষে বলা সম্ভব হবে বলে জানান মুফিত।

এদিকে সেনাবাহিনীর স্পোশাল ফোর্স চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছে আন্তবাহিনী গণসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)।

পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম অঞ্চলের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনায় কমান্ডো অপারেশন পরিচালিত হয়। অভিযানে সবাইকে নিরাপদ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। বিমানের সবাই সুস্থ আছেন। যাত্রী ও ক্রুদের কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হননি। তবে কথিত বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ‘আক্রমণাত্মক’ হওয়ায় তিনি নিহত হন।

তিনি বলেন, ‘কমান্ডো অভিযানে নিহত যুবকটির আনুমানিক বয়স ২৫ থেকে ৩০। তার নাম মাহাদী বলে জানা গেছে। সেনাবাহিনীর এক নম্বর প্যারা কমান্ডোর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রথমে আটক করে। পরে তার মৃত্যু হয়। সন্ধ্যা সাতটা ১৭ মিনিট থেকে সাতটা ২৫ মিনিট পর্যন্ত আট মিনিটের অভিযানে বিমান ‘ছিনতাই চেষ্টকারীকে’ নিবৃত্ত করা হয়।

এস এম মতিউর রহমান বলেন, ‘সেনা কমান্ডোকে নেভি সোয়াট ও র‌্যাব সহযোগিতা করেছে। সৌভাগ্যক্রমে এক নম্বর প্যারা কমান্ডোর দলটি চট্টগ্রামেই ছিল। বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত এক নম্বর প্যারা কমান্ডো দলকে বিমানবন্দরে পাঠানো হয়। তারা প্রথমে ‘ছিনতাই চেষ্টাকারীকে’ আত্মসমর্পণ করতে আহ্বান জানায়। কিন্তু আত্মসমর্পণ করেনি। পরে অপারেশনে সে ইনজুরড (আহত) হয়। তার কাছে একটি অস্ত্র ছিল। সেই অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে।

মতিউর রহমান বলেন, ‘হোলি আর্টিজানে কমান্ডো অভিযান পরিচালনাকারী লে. কর্নেল ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান এতো দ্রুত হয়েছে যে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। এখন বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করা হবে।’

Bootstrap Image Preview