ভারত তখনো স্বাধীনতার আলোয় আলোকিত হয়নি। সর্বত্র চলছে স্বাধীন হওয়ার লড়াই। এরই মাঝে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে বিনা পয়সায় তেলেভাজা বিতরণ শুরু হয়েছিল লক্ষ্মী নারায়ণ সাউ অ্যান্ড সন্সে।
সেটা ১৯৪২ সালের ঘটনা। প্রথম প্রথম ব্রিটিশ পুলিশের ভয় থাকত। পরে দেশ স্বাধীন হলে সেই ভয় কেটে যায়। কিন্তু নেতাজির খোঁজ আর পায়নি দেশ।
শুধু অপেক্ষা করেই কেটেছে সাত দশকেরও বেশি সময়। চারপাশের অনেক কিছু বদলালেও এই বিশেষ দিনে তেলেভাজা বিলি বন্ধ হয়নি।
৭৭ বছর পেরিয়েছে এভাবেই। এলাকার লোক তো বটেই বহু দূর থেকে মানুষ আসেন তেলেভাজা খেতে ভারত মায়ের বীর সন্তানকে সম্মান জানাতে।
দোকানের পথ চলা শুরু হয়েছে ১৯১৮ সালে। তখন থেকেই শহরের মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্তদের ঘরে ঘরে পৌঁছে যেতে থাকে এই দোকানের নানা পদ।
এক সময় নেতাজির সংস্পর্শে আসেন পরিবারের সদস্যরা। সেটাও একটা ইতিহাস। জানা যায়, দোকানের কাছাকাছি কোনো একটা জায়গায় নেতাজির আসা যাওয়া ছিল। সেখানে তাকে এই দোকানের খাবার খাওয়ানো হত।
তখন নেতাজি স্কটিশচার্চ কলেজের ছাত্র। সেই সূত্রেই যোগাযোগ। তারপর ধীরে ধীরে গভীর হয় সম্পর্ক। পেরিয়ে যেতে থাকে সময়। সুভাষ চন্দ্র বসু হয়ে ওঠেন নেতাজি।
দোকানের মালিকপক্ষ মনে করে এবার নেতাজির স্মরণে কিছু করা উচিত। সেই উদ্দেশেই শুরু হয় তেলেভাজা বিতরণ।
এই দোকান চালু করেন খেদু সাউ। তার সঙ্গেই যোগাযোগ হয় নেতাজির। ১৯৪২ সাল থেকে তার উদ্যোগেই শুরু হয় তেলেভাজা বিতরণ।
এখন দোকান চালান তার দুই নাতি। তাদেরই একজন কাউন্সিলর মোহনকুমার গুপ্ত। তিনি জানান, সকাল ১০টার কিছু আগে থেকে শুরু হয়েছে তেলেভাজা বিতরণ। দুপুর পর্যন্ত যারা আসবেন তাদেরই দেওয়া হয়। নেতাজির জন্মদিনকে স্মরণ করে দোকানের একাবারে সামনে থাকা মূর্তিতে মালা দেওয়া হয়েছে। সাজানো হয়েছে চারপাশটাও।