সামরিক থেকে শুরু করে থেকে জ্বালানী পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে কাতারকে সাহায্য ও সহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান।
রোববার তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান উত্তর সাকারিয়া প্রদেশে রাখা এক বক্তব্যে এমন ঘোষণা দেন।
এ সময় প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, আমরা সব সময় মনে রাখব কাতার আমাদের সঙ্গে একাত্মা প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, আমরা সর্বাত্মকভাবে কাতারকে আমাদের সাহায্য সহযোগিতা করব। এটি সামরিক থেকে ব্যবসায়ীক এবং ভ্রমণ থেকে জ্বালানী হতে পারে।
গত বছর ৫ জুন কাতারের ওপর উপসাগরীয় দেশগুলোর অবরোধ আরোপের পর গত সপ্তাহ থেকেই তুরস্ক দেশটিতে দুধ, ডিম, দুই, মুরগির মাংস এবং জুস ইত্যাদি খাদ্যপণ্য বিমানযোগে পাঠানো শুরু করেছে। কাতারের ওপর অবরোধের ফলে দেশটিতে যেন খাদ্য সংকট তৈরি না হয় সেই প্রচেষ্টাতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে তুরস্ক।
দুধের জন্য ধন্যবাদ তুরস্ক!’ কয়েকদিন আগে টুইটারে এক কাতারি নাগরিকের এমন মন্তব্য এবং একইসঙ্গে কাতারের সুপারমার্কেটগুলোতে সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে তুরস্কের ব্র্যান্ডের সব দুধের বোতলের ছবি সবার নজর কেড়েছিল।
এর পর থেকেই কাতারকে অবরোধ থেকে বাঁচাতে খাদ্যনিরাপত্তা ছাড়াও সামরিক ও কূটনৈতিকসহ প্রায় সব ধরণের প্রচেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রশাসন।
এরপর গেল বছরের আগস্টে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় তুর্কি লিরার অব্যাহত দরপতন ঘটেছে। ওই সময় এরদোগানের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছে কাতার।
তুর্কি সঙ্কটের সময় কাতার আমির এরদোগানকে জানিয়েছেন, তুরস্কের মুদ্রা লিরার দরপতন ঠেকাতে ১৫ বিলিয়ন লিরা বিনিয়োগ করবে কাতার। তুরস্কের শেয়ারবাজার ও ব্যাংকে এ বিনিয়োগ করা হবে।
কাতার আমির এক টুইটবার্তায় বলেছেন, আমরা আমাদের তুর্কি ভাইদের পাশে দাঁড়াব; যারা কাতারের পাশে দাঁড়িয়েছিল এবং মুসিলম বিশ্বের পাশে আছে। কাতারের আমিরের এই ঘোষণার পর লিরার দর ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।
তুরস্কের ওপর মার্কিন প্রশাসনের চাপ সৃষ্টি সত্ত্বেও দেশটিতে দেড় হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে কাতার। গতকাল তুরস্ক সফরে পৌঁছে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলে সানি এ ঘোষণা দিয়েছেন।
তুরস্কের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদার করার লক্ষ্য নিয়ে তিনি এ সফর করছেন। বৈঠকে তারা দু দেশের বর্তমান কৌশলগত সম্পর্ক এবং তা আরো গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। এ বৈঠকে শেখ তামিম জানান, তার দেশ তুরস্কের মুদ্রা বাজার ও ব্যাংকিং খাতে দেড় হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন তুরস্কের পণ্যের ওপর নানারকম বাড়তি শূল্ক আরোপের পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং আংকারার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তখন কাতারি আমির তুরস্কের প্রতি এই সমর্থন দিলেন। এরইমধ্যে তুরস্কও মার্কিন কিছু পণ্যের ওপর বাড়িত শুল্ক বসানোর ঘোষণা দিয়েছে। মার্কিন পদক্ষেপে তুর্কি মুদ্রা লিরার মান শতকরা অন্তত ২০ ভাগ পড়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক তুরস্কের দুই মন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও দুই পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধির পর প্রথম দেশ হিসেবে কাতার প্রধান তুরস্ক সফর করেছেন।