Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

এশিয়ান অর্থনৈতিক কূটনীতিতে চালকের আসনে শেখ হাসিনা: এশিয়ান রিভিউ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ জানুয়ারী ২০১৯, ০৮:২৭ PM
আপডেট: ০৮ জানুয়ারী ২০১৯, ০৮:২৭ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের তৃতীয়বারের মতো বিজয় তার সরকারের বিদেশনীতির হাতকে আরও শক্তিশালী করেছে। বিশেষ করে নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বিষয়গুলো পরিচালনায় শেখ হাসিনার অবস্থান আরও দৃঢ় হচ্ছে। জাপানভিত্তিক সংবাদপত্র নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ এমনটাই মনে করছে।

সংবাদমাধ্যমটিতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয়বার ও নিজের চতুর্থ দফায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরপরই শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

শ্রীরাম চাউলিয়া নামে নিবন্ধকার লিখেছেন, বিশ্বের প্রভাবশালী এই দুই নেতা এতটুকু বিলম্ব করেননি শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে।

নিবন্ধকার মনে করছেন- নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের ক্ষেত্রে চীন ও ভারত রয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন অবস্থানে। সেখানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ এমন এক মধ্যমপন্থা নিয়ে এগোচ্ছে, যা নয়াদিল্লি-বেইজিংয়ের ঠাণ্ডাযুদ্ধে স্থিরতা এনে দিতে পারে।

তিনি লিখেছেন, শেখ হাসিনার এই বিপুল নির্বাচনী বিজয় নয়াদিল্লি ও বেইজিংকে হ্যান্ডল করার সক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে বলেও মনে করছেন শ্রীরাম চাউলিয়া।

নিবন্ধকারের অভিমত, বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক দেখতে চায় ভারত। আর তাই কৌশলগত কারণে শেখ হাসিনার কর্তৃত্বপরায়ণ মনোভাবের বিষয়টি ছাপিয়ে তার সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী উদ্যোগগুলো ভারতের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে।

তিনি লিখেছেন, বিরোধীপক্ষের ওপর শেখ হাসিনার রাজনৈতিক নিষ্পেষণে ভারত বিচলিত হলেও বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক চর্চার ব্যাপারে সবসময়ই আগ্রহী। সে কারণে ২০১৮ সালের নির্বাচনটি যেন আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়, সে ব্যাপারে নয়াদিল্লি পর্দার আড়ালে থেকে চেষ্টা চালিয়েছে।

অন্যদিকে চীনও শেখ হাসিনার নেতৃত্ব নিয়ে অনেকাংশেই সন্তুষ্ট। বৈদেশিক অর্থসহায়তা অর্জনের ক্ষেত্রে দেশটি শেখ হাসিনার বাস্তবমুখী কঠোর নেতৃত্বকে গুরুত্ব দেয় দেশটি।

নিবন্ধকার লিখেছেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের পর শেখ হাসিনা এখন জানেন তাকে গুরুত্ব না দিয়ে কোনো উপায় নেই চীনের। ফলে অন্য যে কোনো উন্নয়নশীল দেশের চেয়ে চীনের সঙ্গে এখন তার সম্পর্কটিই সবচেয়ে ভালো।

এদিকে ভারত যেন নাখোশ না হয়, সে বিষয়টিও মাথায় রেখে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনে চীনের প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। বরং মাতারবাড়ী বন্দর স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে তার কাজ তুলে দিয়েছেন জাপানের হাতে।

এই মাতারবাড়ী বন্দর হবে জাপান-ভারত এশিয়া আফ্রিকা গ্রোথ করিডোরের (এএজিসি) গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।

চীনের সঙ্গে শেখ হাসিনার এই ভারসাম্যের অর্থনৈতিক কূটনীতি ভারতকে কিছুটা শান্ত রেখেছে বলে মনে করছেন নিবন্ধকার শ্রীরাম চাউলিয়া। তার অভিমত, বাংলাদেশ এখন চীন থেকে যা প্রয়োজন তা নিচ্ছে, কিন্তু তার জন্য দেশের চাবিকাঠি হাতে তুলে দিচ্ছে না। আর এবারের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর শেখ হাসিনার দরকষাকষির হাত আরও দৃঢ় হয়েছে।

নিবন্ধকার মনে করছেন, ভারতের জন্য শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্বই প্রয়োজন। যিনি সীমান্তে ইসলামপন্থীদের চাপে রাখবেন, আবার চীনকেও নিয়ন্ত্রিত সম্পর্কে বেঁধে রাখবেন।

শেখ হাসিনা যখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবার শপথ নিলেন- তাতে ধরেই নেয়া যায়, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কূটনীতিতে শেখ হাসিনাই এখন চালকের আসনে।

শেখ হাসিনাকে লৌহমানবী অভিহিত করে শ্রীরাম নিবন্ধে লেখেন, শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কঠোর কর্তৃত্ব দিয়ে নিজের দেশের বিরোধী পক্ষকে যেমন উড়িয়ে দিয়েছেন, তেমনি পূর্ব ও পশ্চিম উভয়বিশ্বে নিজের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করে নিয়েছেন তিনি।

এশিয়ার পরস্পরবিরোধী প্রধান দুই শক্তি ভারত-চীনের সঙ্গেই সুসম্পর্ক রেখে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য ছোট দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশকে সবচেয়ে ঊর্ধ্বে তুলে এনেছেন শেখ হাসিনা।

Bootstrap Image Preview