Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আ.লীগের আমলে এই প্রথম মাদারীপুরে মন্ত্রী নেই, হতাশ জেলাবাসী

মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০৬:৩৮ PM
আপডেট: ০৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০৬:৩৮ PM

bdmorning Image Preview


আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই প্রথম মাদারীপুরের কেউ স্থান পায়নি মন্ত্রীসভায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পূর্বে আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে তখন কেউ না কেউ মাদারীপুর থেকে মন্ত্রীসভায় স্থান পেয়েছে। এ বছরই প্রথম মন্ত্রীত্বশূন্য মাদারীপুর।

নতুন মন্ত্রীসভা ঘোষণার পর থেকেই শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই নয় মাদারীপুর জেলার সাধারণ মানুষও হতাশ হয়ে পড়েছে। কম হলেও মাদারীপুরের তিন জন সংসদ সদস্যের মধ্যে থেকে এক জন নতুন মন্ত্রীসভার সদস্য হবে এ প্রত্যাশা ছিল মাদারীপুরবাসীর।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫৪ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন যুক্তফন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেন। মাদারীপুর দুই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের পিতা মৌলভী আচমত আলী খান নির্বাচনে জয়ী হলে তাকে মন্ত্রীসভার সদস্য করা হয়। কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তান সরকার সেই সংসদ ভেঙে দেন। এরপরে ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে আবার যখন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে তখনও মাদারীপুর থেকে ফণিভূষণ মজুমদারকে খাদ্যমন্ত্রী করা হয়।

পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য হয়ে আবদুল মান্নান শিকদার শিল্প প্রতিমন্ত্রী হন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে শেখ শহিদুল ইসলাম শিক্ষামন্ত্রী ও আবুল খায়ের চৌধুরী যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী, ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে শেখ শহিদুল ইসলাম গণপূর্তমন্ত্রী,  ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার প্রথম মন্ত্রীসভায় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে স্থান পেয়েছিনে মাদারীপুর তিন আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবুল হোসেন।

এরপর ২০০৮ সালে দ্বিতীয়বার শেখ হাসিনা সরকার গঠন করলে মাদারীপুর তিন আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবুল হোসেন যোগাযোগমন্ত্রী, মাদারীপুর দুই আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান নৌ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব এবং মাদারীপুর এক আসনের সংসদ সদস্য নূর ই আলম চৌধুরী লিটন হুইপ নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে শেখ হাসিনা আবার সরকার গঠন করলে মাদারীপুর দুই আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানকে পুনরায় নৌ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়।

আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতারা জানান, মাদারীপুরকে বলা হয় আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক। ১৯৯১ সাল থেকে তিনটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করে আসছে। শুধু তাই নয় আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে যে কটি সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশে হয়েছে তার সবগুলোতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে।

স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবার একাধিক মন্ত্রী পেয়েছে মাদারীপুর। নেতাকর্মীরা এখনও আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার এ সরকারের মধ্যেই মাদারীপুর থেকে কাউকে না কাউকে তার মন্ত্রী সভায় রাখবেন।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ভিপি জাহিদ হোসেন অনিক বলেন, ছাত্রলীগসহ তরুণ প্রজন্মের নেতাকর্মীদের আশা ছিল মাদারীপুর থেকে এক বা একাধিক নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের নতুন মন্ত্রীসভায় স্থান পাবে। প্রধানমন্ত্রী নতুন মন্ত্রীসভায় যাদের রেখেছেন এবং তার এই সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে জোর দাবি জানাচ্ছি, আগামীতে তিনি যদি মন্ত্রীসভার আকার বৃদ্ধি করেন তা হলে কম পক্ষে একজনকে হলেও মাদারীপুর থেকে যেন মন্ত্রীসভার সদস্য নিযুক্ত করেন।

জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও জেলা আওয়মী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসে সরকার গঠন করেছে তখনই মাদারীপুর থেকে কাউকে না কাউকে মন্ত্রীসভায় স্থান দিয়েছেন। শুধুমাত্র এ বছরের নতুন মন্ত্রীসভায় মাদারীপুর থেকে কাউকে রাখা হয়নি। জেলার আওয়ামী লীগসহ সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছি। আমাদের সকলের দাবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নতুন মন্ত্রী সভায় মাদারীপুর থেকে কম হলেও একজনকে তার মন্ত্রী সভায় রাখবেন।

Bootstrap Image Preview