Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

রাণীনগরে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা, পলাতক শ্বশুর বাড়ির লোকজন

আবু ইউসূফ, রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০১:৩৫ PM
আপডেট: ০৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০১:৩৫ PM

bdmorning Image Preview


নওগাঁর রাণীনগরে দুই সন্তানের জননীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে।

রবিবার (৬ জানুয়ারি) রাতে ওই গৃহবধূকে বেধরক মারপিটের এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন কৌশলে গলায় দড়ি দিয়ে ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে রেখে লোক দেখানোর ভান করে ওইদিন সকালেই তারা গলা থেকে দঁড়ি খুলে চিকিৎসার জন্য রাণীনগর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

এমন বেগতিক দেখে তারা তরিঘড়ি করে হাসপাতাল থেকে লাশ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে লাশ ফেলে রেখে বাড়ির সকল সদস্যরা পালিয়ে যায়। মূহুর্তের মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক জনতা ওই গৃহবধূকে দেখতে বাড়িতে ভিড় জমায়।

খবর পেয়ে রাণীনগর থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। 

জানা গেছে, উপজেলার গোনা ইউনিয়নের পিরেরা গ্রামের নবাব আলী সরদারের মেয়ে নাসিমা আক্তার (২৫) এর সাথে ২০০৪ সালে একই উপজেলার পশ্চিম ঘোষগ্রামের আতুল প্রাং এর ছেলে এলাহী বক্সের বিয়ে হয়। সব ঠিকঠাক মত চলাকালীন সময়ে তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্মগ্রহণ করে। সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে অন্য এক মেয়ের সাথে এলাহী বক্সের সম্পর্ক গড়ে উঠলে গৃহবধূ নাসিমা তা প্রতিবাদ করে।

এমনকি গুণঞ্জন চলছে, ওই মেয়েকে স্বামী এলাহী বিয়ে করেছে। এ নিয়েই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্ন্যের এক পর্যায়ে এলাহী তার স্ত্রী নাসিমাকে প্রায়ই মারপিট করতো। এসব ঘটনায় পারিবারিকভাবে শালিশ বৈঠকও হয়েছে কয়েকবার। বৈঠক হলেও শান্তিপূর্ণ কোন সমাধান হয়নি।

এর ধারাবাহিকতায় রবিবার রাতে গৃহবধুকে বেধর মারপিটের এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে এলাহী ও তার পরিবারের লোকজন কৌশলে গলায় দঁড়ি দিয়ে ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে রেখে লোক দেখানোর ভান করে ওই দিন সকালে তারা গলা থেকে দঁড়ি খুলে চিকিৎসার নামে রাণীনগর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। হাসপাতাল থেকে গৃহবধুর লাশ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ফেলে রেখে বাড়ির সকল সদস্যরা পালিয়ে যায় বলে স্থানীয়রা জানান।

এ ব্যাপারে গৃহবধূ নাসিমা বেগমের ভাতিজা ও গোনা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কোরবান আলী অভিযোগ করে জানান, আমার ফুফু'কে বেশ কিছুদিন ধরে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে কয়েকবার বৈঠকও হয়েছে। এক সময় আমরা জানতে পারি সে অন্যত্র আরো একটি বিয়ে করেছে। এরপর থেকে নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। আমার ধারণা রবিবার রাতে কোন এক সময় আমার ফুফুকে পিটিয়ে হত্যা করে গলায় রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে।

রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো: তারিকুল রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হবে। ময়নাতদন্ত রির্পোট স্বাপেক্ষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তবে গৃহবধূর স্বজনরা দাবি করছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে রাণীনগর থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
 

Bootstrap Image Preview