Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নোয়াখালীর ওই নারীকে গণধর্ষণের আলামত মিলেছে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ জানুয়ারী ২০১৯, ০৫:২৭ PM
আপডেট: ০৩ জানুয়ারী ২০১৯, ০৫:২৭ PM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী ছবি


নৌকায় ভোট না দেওয়ায় সন্তানদের বেঁধে রেখে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় ওই নারীকে (৪০) গণধর্ষণ এবং নির্যাতেনের আলামত পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ডা. মমতাজ বেগম এ তথ্য জানান।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. খলিল উল্যাহ জানান, ডাক্তারি পরীক্ষাকালে নির্যাতনের শিকার ওই নারীর শরীর থেকে সংগ্রহ করা আলামত পরীক্ষা করা হয়। এতে ধষর্ণ ও নির্যাতনের আলামত পাওয়া যায়। আলামত সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো হয়েছে। পরে সেটি নোয়াখালী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে পাঠানো হবে।

সকালে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ অভিযোগ করে জানান, গত রবিবার সকালে এলাকার একটি ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে আওয়ামী লীগের কয়েকজন তাকে তাদের পছন্দের প্রতীকে ভোট দিতে বলেন। এতে রাজি না হওয়ায় ওই যুবকরা তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। পরে রাতে সোহেল, বেছু, মোশারফসহ কয়েকজন যুবক স্বামী ও সন্তানদের বেঁধে তাকে পুকুরপাড়ে এনে গণধর্ষণ করেন।

এ নারীর দাবি, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা সবাই একই এলাকার চরজুবলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য রুহুল আমিনের লোক। আসামিরা কে কোথায় আছে— রুহুল আমিন সবই জানেন। এখন এ ঘটনায় গ্রেফতার আসামিদের লোকজন আমাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। মামলা তুলে না নিলে আমার পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়া হচ্ছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে সদর উপজেলার চরওয়াফদা ইউনিয়ের ৪নং ওয়ার্ডের সেনবাগ ইটভাটা থেকে সুবর্ণচর ইউপি সদস্য রুহুল আমিন (৩৩) খোরশেদের ছেলে এবং বেছু (২৮) আবুল কাশেমের ছেলেকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী অভিযোগ করলে সোমবার লক্ষ্মীপুর থেকে আবদুল মন্নানের ছেলে ও আওয়ামী লীগকর্মী স্বপন (৩০) এবং মঙ্গলবার রাতে চরজুবলি ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামের আহাম্মদ উল্লাহর ছেলে বাদশা আলমকে (৩৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। এর পর বুধবার দুপুরে মামলার প্রধান আসামি একই গ্রামের ইসমাইলের ছেলে আওয়ামী লীগকর্মী মো. সোহেলকে (৩৫) কুমিল্লা জেলার অজ্ঞাত স্থান থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

চরজব্বর থানার ওসি নিজামউদ্দিন জানান, ভোর ৫টার দিকে সদর উপজেলার চরওয়াফদা ইউনিয়ের ৪নং ওয়ার্ড থেকে রুহুল আমিনকে গ্রেফতার করা হয়। একই সময় সেনবাগ ইটভাটা থেকে বেছু গ্রেফতার হয়।

এদিকে এ ঘটনা তদন্তে নোয়াখালীতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের দুটি তদন্ত দল বুধবার তদন্ত শুরু করে।

ধানের শীষে ভোট দেয়ার জের ধরে রবিবার রাত ১১টার দিকে সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলি ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামে সিএনজি অটোরিকশাচালকের স্ত্রী (৪০) গণধর্ষণের শিকার হন।

এ সময় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা গৃহবধূর স্বামী, ছেলে ও মেয়েকে পিটিয়ে আহত করে। ঘটনার পর পরই গোপনে গৃহবধূ ও আহতদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালে গৃহবধূর দাবি, নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার জেরে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এ ঘটনার সঙ্গে দলীয় সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এলাকাবাসী জানান, নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনে বিএনপি প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহানের ধানের শীষ প্রতীকে রবিবার সকাল ১০টায় ভোট দেন ওই গৃহবধূ। এ কারণে আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়। এর পর ওই দিন রাত ১১টার দিকে গৃহবধূর বাড়িতে প্রবেশ করে তারা তিনজনকে মারধর এবং বেঁধে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে। এর পর ঘটনাটি কাউকে না বলতে এবং মামলা না করতে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তারা পালিয়ে যায়।

ধর্ষণে অভিযুক্তরা হল- একই গ্রামের মো. তোফায়েলের ছেলে আওয়ামী লীগকর্মী ও সন্ত্রাসী মোশাররফ হোসেন, ইসমাইলের ছেলে সোহেল, আবুল কাশেমের ছেলে বেছু, আবুল কালামের ছেলে সোহেল, আবদুল মন্নানের ছেলে স্বপন, ইউসুফের ছেলে আনোয়ার, নুরুল হকের ছেলে আমীর হোসেন, বাগন আলী ওরফে ইসমাইলের ছেলে মো. হানিফ, টোকাইর ছেলে সালাউদ্দিন, খোরশেদের ছেলে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রুহুল আমিন, আহমদ উল্লাহর ছেলে বাদশা।

Bootstrap Image Preview