Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নোয়াখালীর সেই ধর্ষণকারীদের ডিআইজি ফারুকের হুঁশিয়ারি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:৪২ PM
আপডেট: ০২ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:৪২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


নির্বাচন কেন্দ্র করে নোয়াখালীতে ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীকে দেখতে গেলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি গোলাম ফারুক।

বুধবার রাতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নির্যাতিত নারীকে দেখতে যান ডিআইজি গোলাম ফারুক। এসময় পৃথক পৃথকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত নারী ও তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করেন এবং পুরো ঘটনার বিবরণ শোনেন তিনি।

এসময় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ডিআইজি গোলাম ফারুক বলেন, ওই নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতরা যত বড় শক্তিশালী কিংবা যে দলেরই হোক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের আইনের আওতায় আনা আমাদের একমাত্র কাজ। অভিযুক্তদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

ডিআইজি গোলাম ফারুক আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে নয়জনকে আসামি করে মামলা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রধান আসামিসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তারা যে দলের বা যত প্রভাবশালী হোক তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা পুলিশের দায়িত্ব।

এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাহীনতা ও হুমকির বিষয়টি জানানো হলে ডিআইজি গোলাম ফারুক বলেন, নির্যাতিত নারীর গ্রামের বাড়ি পাহারা দেবে পুলিশ। শতকরা ৮০ ভাগ ভোট পাওয়া এই সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে কেউ বাধাগ্রস্ত করলে প্রতিহত করা হবে।

পরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন ডিআইজি গোলাম ফারুক। এর আগে সন্ধ্যায় ওই নারীর গ্রামের বাড়ি সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলি পরিদর্শন করে এবং সেখানকার স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন ডিআইজি।

এ সময় তার সঙ্গে অতিরিক্ত ডিআইজি আবুল ফয়েজ, জেলা পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরিফসহ পুলিশের স্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, গণধর্ষণের ঘটনা তদন্তে বুধবার দুপুরে মানবাধিকার কমিশনের তিন সদস্যের একটি কমিটি নোয়াখালীতে আসেন। তারা হাসপাতালে ওই নারীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। পরিদর্শনের সময় কমিটির প্রধান মানবাধিকার কমিশনের পরিচারক আল-মাহমুদ ফয়জুল কবীর বলেন, ভুক্তভোগীর সাক্ষ্য ও ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর তাদের তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেওয়া হবে। এরপর বিকেলে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

অভিযোগ উঠেছে- নির্যাতিতা নারীর স্বামী বাদী হয়ে একই গ্রামের ইউপি সদস্য রুহুল আমিন, মোশাররফ হোসেন, বাদশা, সোহেল, হেঞ্জু, সোহেল, বেচু, জসিম, স্বপন, মো. হানিফ, আবুল, আনোয়ার, আমির হোসেনসহ ১৩ জনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ করলেও খোরশেদের ছেলে ইউপি সদস্য রুহুল আমিন, চান মিয়ার ছেলে হেঞ্জু, ইউছুফ মাঝির ছেলে আনোয়ারসহ ৪ জনকে অভিযোগ থেকে বাদ দিয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা এজাহারভুক্ত করেন ওসি।

সূত্র জানায়, ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেয়ার জেরে গত রোববার রাত ১১টায় উপজেলা চর জুবলি ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামে সিএনজিচালক মো. সিরাজ, ছেলে আবদুল কুদ্দুছ ও শিশু ইয়ানুরকে বেঁধে পিটিয়ে আহত করে। পরে তাদের সামনেই গৃহবধূর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। ওই গৃহবধূকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ-যুবলীগের লোকজন গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ ওঠে। পরে ওই নারীসহ তার স্বামী-সন্তানদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক মমতাজ বেগম ও সিনিয়র নার্স সাজেদা বেগমসহ অপর নার্সরা জানান, গৃহবধূকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে কামড়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে।

এ সংবাদ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত হলে পুলিশ-প্রশাসনসহ সারা দেশে তোলপাড় শুরু হয়। পরে পুলিশ গত মঙ্গলবার সকালে ওই গ্রামের আহাম্মদ উল্লার ছেলে বাদশা আলমকে গ্রেফতার করে।

এদিকে একই দিনে একই গ্রামের মৃত আবদুল মন্নানের ছেলে আওয়ামী লীগ কর্মী স্বপনকে লক্ষ্মীপুর এবং বুধবার ইসমাইলের ছেলে আওয়ামী লীগ কর্মী মো. সোহেলকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

চর জব্বর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন জানান, আহত সিএনজিচালকের স্ত্রীকে সন্ত্রাসীরা ধর্ষণ করায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Bootstrap Image Preview