Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ইতিহাস গড়ে ৪র্থ দফায় প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শেখ হাসিনা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০২:৫৮ PM
আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০২:৫৮ PM

bdmorning Image Preview


১৯৭১ সালে যুদ্ধোকালীন সময় হতে ১১তম জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত বাংলাদেশে সর্বমোট ১৪তম প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই ইতিহাসে রেকর্ড গড়ে টানা ৪র্থ বারের মত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর শপথ নিতে যাচ্ছেন তিনবারের সফল দেশনেত্রী আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারের হত্যার সময় বিদেশে অবস্থানের কারণে সেদিন প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা এবং তাঁর বোন শেখ রেহানা।

কিন্তু পিতার মৃত্যুর পরেও দীর্ঘদিন মাতৃভূমিতে ফিরতে পারেননি দুই বোন। পরে ১৯৮১ সালের ১৭ই মে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জীবন বাজি রেখে দেশে ফিরে আসেন দেশনেত্রী শেখ হাসিনা।

সেদিন বাংলাদেশের ১০-১২ লাখ সাধারণ মানুষের সমাগম হয়েছিল তাঁকে স্বাগত জানাবার জন্য (তৎকালীন পত্রিকার তথ্য)। কিন্তু তার পরেও শেখ হাসিনার জন্য সহজ ছিল না বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠা। যদিও ১৯৮১ সালে ১৩-১৫ই ফেব্রুয়ারি তারিখে অনুষ্ঠিত দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে হাসিনাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়েছিল।

প্রেসিডেন্ট হিসাবে তাঁকে যে আ’লীগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তা ছিল একটি ভেঙ্গে পরা দল। শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে দল হিসেবে ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিল আওয়ামী লীগ। এরপর মিজানুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে আলাদা হয়ে যায় আওয়ামী লীগের একংশ। অন্যদিকে মহিউদ্দন আহমদ এবং আব্দুর রাজাকের নেতৃত্বে একটি অংশ বেরিয়ে 'বাকশাল' নামে দল গঠন করেন, ফলে আওয়ামী লীগ দল হিসেবে দুর্বল হয়ে যায়। ফলে আন্দোলনের মধ্য দিয়েই শেখ হাসিনাকে দলের নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে হয়। দেশ পায় একজন আপসহীন ও আন্দোলনে দমে না যাওয়া নেত্রী।

কিন্তু তিনবারের এই সফল্য দেশে নেত্রীর চলার পথ এত সহজ ছিল না। ১৯৮১ সালে দেশে ফেলার পরে ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আ’লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং ৭৬ আসনে বিজয় পায়।  আর এর মধ্যে ৩টি আসনে বিজয় হয় শেখ হাসিনা এবং ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে দলীয় প্রার্থী দিয়ে ৮৮ আসনে জয়ী হয়ে বিরোধী দল হিসাবে সংসদে অংশগ্রহণ করে সাধারণ মানূষের দাবি আদায়ে নতুন করে আন্দোলন শুরু করেন।

পরে ১৯৯৬ সালে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করেন তিনি। তাঁর এই মেয়াদে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পন্ন হয়। ফিরে আসে পার্বত্য অঞ্চলের চুক্তি। কৃষি খ্যাতে সমৃদ্ধ হয়ে উঠে বাংলাদেশ। কিন্তু আবারো ভোট চুরি ও ব্যালট দখল নির্বাচনের সম্মুখীন হতে হয় এই নেত্রীকে।

২০০১ সালে তাঁকে আবারো বিরুধী দল হিসাবে সংসদে অবস্থান করতে হয়। কিন্তু আপসহীন এই রাজনৈতিক নেতা সাধারণ মানুষের দাবি নিয়ে সংসদে এবং রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন। এর মাঝে তাকে কয়েকবার হত্যার চেষ্টাও চালায় রাষ্ট্র বিরোধীরা।

এত বাধা বিপত্তির পরেও কখন আপস করেনি কোনো অপশক্তির কাছে।কখন রাজনীতির ক্ষেত্রে বিন্দু মাত্র ছাড় দেননি । যার কারণে তাঁকে কারা বরণও করতে হয়েছে। কিন্তু বার বার তিনি ফিরেছেন বীরের বেশে।

অবশেষে ২০০৮ সালের নির্বাচনে সাধারণ মানুষের ভোটে নিরংঙ্কুস বিজয় অর্জন করে শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও নির্বাচিত হয় তাঁর নেত্বৃতাধীন আ’লীগ। টানা দু’বার ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নে ধারা তরান্বিত করেন তিনি। বিশ্বের বুকে  দেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করে তুলেন।

গতকাল অনুষ্ঠিত হয়ে গেল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।এ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২৫৯টি আসনে জয়ী হয়েছে। যার ফলে ধরেই নেওয়া যাচ্ছে টানা ৩ বারের মত প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছে মাদার অফ হিউম্যানিটি অখ্যায়িত জন মানুষের নেত্রী শেখ হাসিনা। যা উপমহাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে নতুন মাইল ফলক এবং বিশ্ব রাজনিতিতে বিরল।

Bootstrap Image Preview