Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:২৪ AM
আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:২৮ AM

bdmorning Image Preview


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের পথে আওয়ামী লীগ। আর এর মাধ্যমে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শেখ হাসিনা। এতে করে তিনি ৪র্থ বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হবেন।

এদিকে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ নিলেও শরিকদের ছাড়াই দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে দলটি। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আবারও দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন সরকার প্রধানের। টানা তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হলে এটাও হবে একটি রেকর্ড।

তবে রবিবার রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সারাদেশ থেকে আসা ফলের ধারায় এবারও সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিকেই দেখা যেতে পারে। দশম সংসদ বর্জনকারী বিএনপি ও তার শরিকরা ভোটের সম্ভাব্য ফল বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সারাদেশের ২৯৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ১৮০, জাতীয় পার্টি ১৮, বিএনপি ২ ও অন্যান্য দল ৮টি আসন পেয়েছে।

গোপালগঞ্জ-৩ আসনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই লাখ ২৯ হাজার ৫৩৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির এস এম জিলানী পেয়েছেন ১২৩ ভোট।

রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সারাদেশে ৪০ হাজারের বেশি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়। এরপর শুরু হয় কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটগণনা। তবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক আসনের কেন্দ্রে বিএনপি প্রার্থীদের কোনো এজেন্ট ছিল না। দুপুরে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ইসিতে গিয়ে অভিযোগ করেন, ২২১টি আসনে অনিয়মের চিত্র অভিন্ন। সকাল ৮টায় ভোট শুরু হলেও আগের রাতেই ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরার অভিযোগও করেন তিনি।

তবে রাজধানীর অনেক ভোটকেন্দ্রেই ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখতে পাওয়া গেছে। আবার অনেক স্থানে ভোটকেন্দ্রগুলো ছিল অস্বাভাবিক রকম ফাঁকা। পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে ছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। নিয়োজিত ছিল সেনাবাহিনীও। ঢাকার বাইরে বেশ কয়েকটি আসনের ভোটকেন্দ্রে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দীর্ঘ ১০ বছর পর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা-ধানের শীষের সরাসরি ভোটযুদ্ধ নিয়ে মানুষের মধ্যে ছিল ব্যাপক কৌতূহল। ভোটের আগের রাত থেকে ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও সন্ধ্যার পর তা চালু করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

নির্বাচনী আইন অনুযায়ী সব ধরনের মিছিল নিষিদ্ধ থাকলেও সন্ধ্যার পর রাজধানীসহ দেশের অনেক স্থানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা আনন্দ মিছিল বের করেন। সর্বত্রই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ছিল সতর্ক অবস্থানে। ৩০০ আসনের মধ্যে একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে গাইবান্ধা-৩ আসনের ভোটের পুনঃতফসিল হয়। সে অনুযায়ী ওই আসনে ২৭ জানুয়ারি ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। এবার মোট ভোটারের সংখ্যা ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন।

এর আগে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয় বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের নিজস্ব জরিপে ১৬৮ থেকে ২২২ এবং বেসরকারি সংস্থা আরডিএসের জরিপে আওয়ামী লীগ ২৪৯ আসন পাবে বলে আভাস দেওয়া হয়েছিল। তবে নির্বাচন-সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত সারাদেশের ফল গণনার যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে আওয়ামী লীগের আসন সংখ্যা এসব ধারণার চেয়েও বেশি হবে। এমনকি বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় এক থেকে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে জয়ের নজির সৃষ্টি করেছেন।

এদিকে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে গতকাল নির্বাচন বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। জোটের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, দেশের প্রায় সব আসন থেকেই প্রার্থীরা তাদের কাছে ভোট ডাকাতির খবর দিয়েছেন। 'কথিত' এই ফল প্রত্যাখ্যান করে তিনি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করেছেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ নির্বাচনকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, নির্বাচনের নামে গণতন্ত্রের সঙ্গে নিষ্ঠুর প্রহসন করা হয়েছে।

Bootstrap Image Preview