Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

রাত পোহালেই ২৯৯ আসনে ভোট উৎসব শুরু

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:০২ AM
আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:০২ AM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


নানা শঙ্কা কাটিয়ে অবশেষে নির্বাচন অনুষ্টিত হবার আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাকি। যতটুকু রাত এখনো বাকি আছে সেটুকু পেরুকেই শুরু হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।

সব কিছু ঠিক থাকলে রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এই ভোটগ্রহণ। নির্বাচন সম্পন্নের সাথে সংশ্লিষ্ট সুত্রগুলো বলছে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যাবস্থা জোরদার রাখতে দেশব্যাপী মোতায়েন করা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য।

ভোটগ্রহণ শুরুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে শনিবার দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘আগামীকাল (রবিবার) নির্বাচনে সবার জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি এবং সহিংস অথবা নাশকতামূলক অবস্থার সৃষ্টি হলে তা কঠোর হাতে দমন করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিচ্ছি।’

এর আগে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়। গত ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছিল প্রচার-প্রচারণা।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ৭৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ‘ভোটগ্রহণ শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগ থেকে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে কোনো নির্বাচনী এলাকায় যে কোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল ও শোভাযাত্রা করা যাবে না।’

সারাদেশে মোট ১০ কোটি ৩৮ লাখ ২৬ হাজার ৮১৯ জন ভোটার ২৯৯টি সংসদীয় আসনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এদের মধ্যে ৫ কোটি ২৩ লাখ ৭১ হাজার ৬১৬ জন পুরুষ এবং ৫ কোটি ১৪ লাখ ৫৫ হাজার ২০৩ জন নারী ভোটার রয়েছেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মারা যাওয়ায় গাইবান্ধা-৩ আসনের নির্বাচন ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।

৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের ১৮০০ এর বেশি প্রার্থীর অংশগ্রহণে এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। খসড়া তালিকা অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে ১৮৪৯ জন প্রার্থী লড়ছেন। এদের মধ্যে ১৭৪৮ জন রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন পেয়েছেন এবং ১০১ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন।

২৯৯টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ইভিএমের মাধ্যমে ছয়টি আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আসনগুলো হলো- ঢাকা-৬ ও-১৩, চট্টগ্রাম-৯, রংপুর-৩, খুলনা-২ এবং সাতক্ষীরা-২। এসব আসনের মোট ভোটার সংখ্যা ২১ লাখ ২৪ হাজার ৫৫৪ জন।

এদিকে শুক্রবার বিকাল ৫টা থেকে রবিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা মোবাইল ব্যাংকিং ও পোস্টাল ব্যাংকিং সেবা বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে ইসি। এছাড়া ‘রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গুজব রোধ করার স্বার্থে’ শনিবার মোবাইল ফোন অপারেটরদের থ্রিজি ও ফোরজি নেটওয়ার্ক বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রতিদ্বন্দ্বিতায়

আছেন যারা

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে আওয়ামী লীগের ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন (নৌকা) ও বিএনপির নুরুল আমিন (ধানের শীষ)। চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে মহাজোটের শরিক বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী (নৌকা) ও বিএনপির কর্নেল (অব.) মো. আজিম উল্লাহ বাহার (ধানের শীষ)।

চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে আওয়ামী লীগের মাহফুজুর রহমান মিতা (নৌকা) ও বিএনপির মোস্তফা কামাল পাশা (ধানের শীষ)। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড ও আকবর শাহ থানা) আসনে আওয়ামী লীগের দিদারুল আলম (নৌকা) ও বিএনপির আসলাম চৌধুরী (ধানের শীষ)।

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী ও বায়েজিদ) আসনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (লাঙ্গল) ও ২০ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক (ধানের শীষ)। চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে আওয়ামী লীগের এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী (নৌকা) ও বিএনপির মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন সিকদার (ধানের শীষ)।

চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী আংশিক) আসনে আওয়ামী লীগের ড. হাছান মাহমুদ (নৌকা) ও ২০ দলীয় জোটের শরিক এলডিপির মো. নুরুল আলম (ধানের শীষ)। চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ আংশিক) আসনে মহাজোটের শরিক জাসদের মইনউদ্দীন খান বাদল (নৌকা) ও বিএনপির আবু সুফিয়ান (ধানের শীষ)।

চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (নৌকা) ও বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন (ধানের শীষ)। এ আসনে সিপিবি মনোনীত বামজোটের প্রার্থী মৃণাল চৌধুরীও (কাস্তে) আছেন ভোটযুদ্ধে।

চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী-হালিশহর-খুলশী) আসনে আওয়ামী লীগের ডা. আফসারুল আমীন (নৌকা) ও বিএনপির আবদুল্লাহ আল নোমান (ধানের শীষ)। চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে এ আসনেই একমাত্র নারী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী সাবিনা খাতুন সাব্বি (সিংহ) আছেন ভোটযুদ্ধে।

চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর, পতেঙ্গা, ইপিজেড, ডবলমুরিং ও সদরঘাট) আসনে আওয়ামী লীগের এমএ লতিফ (নৌকা) ও বিএনপির আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (ধানের শীষ)। চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের সামশুল হক চৌধুরী (নৌকা) ও বিএনপির এনামুল হক এনাম (ধানের শীষ)।

চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ (নৌকা) ও বিএনপির সরওয়ার জামাল নিজাম (ধানের শীষ)। চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আসনে আওয়ামী লীগের মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী (নৌকা) ও ২০ দলীয় জোটের শরিক এলডিপির কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বীর বিক্রম (ছাতা)।

চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া আংশিক) আসনে আওয়ামী লীগের আবু রেজা মুহাম্মদ নিজাম উদ্দিন নদভী (নৌকা) ও ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াতের আ ন ম শামসুল ইসলাম (ধানের শীষ)। চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী (নৌকা), বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরী (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী (লাঙ্গল) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াতের মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম (আপেল)।

চট্টগ্রাম জেলায় ১ হাজার ৩০২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ৮৩২টি। ৩৯১টি কেন্দ্র সাধারণ ঝুঁকিপূর্ণ ও উপকূলীয় ৭৯টিকে বিশেষ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ আসনের তালিকায় আছে চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া আংশিক), চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) ও চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড ও আকবর শাহ থানা) আসন।

Bootstrap Image Preview