Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

জাতির গর্বের প্রতীক বাংলাদেশ বিমান বাহিনী : রাষ্ট্রপতি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮, ০২:৪৬ PM
আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮, ০২:৪৬ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাতির গর্বের প্রতীক। দেশের আকাশসীমার প্রতিরক্ষা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি জাতীয় যে কোনো প্রয়োজনে দেশ ও জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে বিমান বাহিনী সদস্যগণ তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছে।

আজ বুধবার দুপুরে যশোরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী অ্যাকাডেমি মাঠে রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজ ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। ভবিষ্যতে বিমান বাহিনী বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, সামরিক কৌশলগত দিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিধি ও সম্ভাবনার প্রেক্ষাপটে একটি আধুনিক, পেশাদার ও চৌকস বিমান বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা জাতির পিতা উপলব্ধি করেছিলেন। এ উপলব্ধি থেকেই তিনি বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।’

এ সময় আবদুল হামিদ বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মাত্র তিনটি পুরোনো বিমান নিয়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা আজ অনেক দূর এগিয়ে এসেছে। বর্তমানে আমাদের বিমান বাহিনীতে যুক্ত হয়েছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার, উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন আকাশ প্রতিরক্ষা র‌্যাডার, ক্ষেপণাস্ত্র এবং অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র। এ সব যুদ্ধ উপকরণে বিমান বাহিনীর সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর আধুনিকায়ন এবং দেশের সার্বিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ বাস্তবায়িত হচ্ছে। আমার বিশ্বাস ফোর্সেস গোল ২০৩০ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করবে।’

বিমান বাহিনীর দক্ষতা অর্জনে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই জানিয়ে তিনি বলেন,  ‘বিমান বাহিনীর সদস্যদের সার্বিক দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ক্যাডেটদের মৌলিক প্রশিক্ষণ ও প্রাতিষ্ঠানিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়নসহ প্রশিক্ষণের মেয়াদকাল বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাভের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি বিমানসেনাদের প্রশিক্ষণও যুগোপযোগী করা হয়েছে। নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণে তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করবে। এর মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হলো।’

‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়- জাতির পিতার অনুসৃত নীতির আলোকে আমাদের পররাষ্ট্র নীতি পরিচালিত হচ্ছে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ যুদ্ধ নয়, শান্তি চায়। কিন্তু আমাদের বাহিনীসমূহ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ জন্য প্রয়োজন রয়েছে দক্ষতা, যুদ্ধ উপকরণ ও আত্মনির্ভশীলতার। সেই লক্ষ্যে নিকট ভবিষ্যতে ৫ম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান, উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন র‌্যাডার ও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র বিমান বাহিনীতে সংযোজন করা হবে এবং এর মাধ্যমে বিমান বাহিনীর সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।’

‘বিশ্বায়নের এ যুগে বাংলাদেশের অ্যাভিয়েশন সেক্টরকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ‘‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’’ স্থাপন এবং লালমনিরহাটে বিমান বাহিনীর জন্য অ্যারোস্পেস ইন্ডাষ্ট্রি নির্মাণের প্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছে। আমি আশা করি অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বিমান তৈরির মত সক্ষমতা অর্জন করবে এবং বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে’ বলেও জানান রাষ্ট্রপতি।  

এ সময় বিমান বাহিনীর নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে আব্দুল হামিদ বলেন, ‘বিমান বাহিনী অ্যাকাডেমি থেকে যে মৌলিক প্রশিক্ষণ তোমরা গ্রহণ করেছো, তার যথাযথ অনুশীলন ও প্রয়োগের মাধ্যমে পেশাগত মানোন্নয়নে তোমারা সদা সচেষ্ট থাকবে। মনে রাখবে-সততা, একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে বিমান বাহিনীর ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ থেকে শুরু হবে তোমাদের বৃহত্তর কর্মজীবন। দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে বাংলার আকাশ মুক্ত রাখার যে শপথ আজ তোমরা নিয়েছো-তা বাস্তবায়নে কখনো পিছপা হবে না। আর ভুলবে না এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষের কথা, যাদের অর্থে তোমাদের বেতন-ভাতার যোগান আসে। তোমাদের কর্মদক্ষতা, পেশাদারিত্ব এবং জাতির প্রতি দায়িত্ববোধ তোমাদেরকে নিয়ে যাবে সফলতার স্বর্ণশিখরে। আমি তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।’

Bootstrap Image Preview