শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় নির্ণয়ে জাতীয় নীতিমালা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এজন্য অতিরিক্ত শিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করে দিয়েছে উচ্চ আদালত। এছাড়া এক মাসের মধ্যে কমিটিকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার মধ্যে আদালত এ নির্দেশ দিয়েছে।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে অরিত্রির আত্মহত্যার প্রকাশিত সংবাদ সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবী নজরে আনার পর এ আদেশ দেয় আদালত।
এই চার আইনজীবী হলেন- ব্যারিস্টার অনীক আর হক, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আইনুন্নাহার সিদ্দিকা, জেসমিন সুলতানা।
আদালতের আদেশের পর ব্যারিস্টার অনীক আর হক বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে একটি জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নে অতিরিক্তি শিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন আদালত।’
তিনি বলেন, এক মাসের মধ্যে এই কমিটিকে দুটি প্রতিবেদন দিতে বলেছে আদালত। একটি হচ্ছে, জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নে তারা একটি প্রতিবেদন। আরেকটি হচ্ছে, অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আদালত সরকারের প্রতি রুলও জারি করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, অরিত্রির আত্মহত্যার মতো ঘটনা প্রতিরোধের উপায় নির্ণয় করে একটি জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নের পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে জানান এ আইনজীবী।
স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, অরিত্রি অধিকারী নামে ভিকারুননিসার নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী রবিবার পরীক্ষায় নকল করে ধরা পড়েন। সোমবার দুপুরে ঢাকার শান্তিনগরের বাসায় নিজের ঘরে দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে সে।
স্বজনদের দাবি, ওই ঘটনার পর অরিত্রীর বাবা-মাকে ডেকে নিয়ে ‘অপমান করেছিলেন’ অধ্যক্ষ। সে কারণে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার এ দুটি তদন্ত কমিটি করে। দুই কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
অরিত্রীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র ভিকারুননিসার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার মধ্যে মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ স্কুল পরিদর্শন করে এর অধ্যক্ষ, শিক্ষক, অভিভাবক ও ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এ ঘটনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রভাতী শাখার প্রধান শিক্ষক জিন্নাত আরাকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে।