Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

১০ বছরে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২১.০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

মো. আব্দুল লতিফ বকসী
প্রকাশিত: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৩৬ PM
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৩৬ PM

bdmorning Image Preview


অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য রপ্তানি বাণিজ্য দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সরকারকে বলা হয় বাণিজ্য বান্ধব সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার “ভিশন-২০২১” সফল করতে রপ্তানি বাণিজ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করতে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ডিজিটাল মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতার পর মাত্র ৩৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় দিয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়। ২০০৫-০৬ সালে রপ্তানি ছিল ১০.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০০৯ সালে অর্থাৎ ১০ বছর আগে দেশের রপ্তানি আয় ছিল মাত্র ১৫.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৭৪৪টি পণ্য ২০২টি দেশে রপ্তানি করে আমাদের আয় হয়েছে ৩৬.৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত ১০ বছরে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২১.০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেবা খাতের রপ্তানি ছিল প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

দেশের মোট রপ্তানির পরিমান এখন ৪১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে দেশের মোট রপ্তানি দাঁড়াবে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আশার কথা বিগত তিন মাসে দেশের সেবা খাতের রপ্তানি ৫৫.৫২ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের প্রধান রপ্তানি খাত এখন তৈরি পোশাক। মোট পণ্য রপ্তারি আয়ের প্রায় ৮২ ভাগ আসে তৈরি পোশাক থেকে। এ সেক্টরে প্রায় ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের বেতন ২০১০ সালে ৩৮১ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং ২০১৮ সালে ৫১ ভাগ বৃদ্ধি করে নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছে। তৈরি পোশাক শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ, ফ্যাক্টরিতে কর্মবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ক্রেতা গোষ্ঠীর সহযোগিতায় ১০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, আরো ৮টি প্রকল্পের কাজ চলমান। পরিবেশের সুরক্ষা দিয়ে ৬৭টি গ্রীন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে বাংলাদেশে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ এখন বিম্বের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। তা সম্ভব হয়েছে সময় উপযোগি রপ্তানি বাণিজ্য নীতি প্রণয়ন, রপ্তানিতে উৎসাহ প্রদান করতে ২৭টি পণ্য রপ্তানিতে ২% থেকে ২০% পর্যন্ত নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান, রপ্তানি কারকদের প্রতি বছর সিআইপি ও জাতীয় রপ্তানি ট্রফি প্রদান, বিদেশী মিশনগুলোতে বাণিজ্য ইউং এর সংখ্যা ১৯টি থেকে বাড়িয়ে ২১টিতে বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ গ্রহণ, বাণিজ্য সহজি করণে সরকারের আন্তরিক সহায়তা প্রদান এর কারনে। প্রতিযোগিতা মূলক বিশ^বাণিজ্যে টিকে থাকতে এবং বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে ব্যবসায়ীদের দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হবে। তিন বছর পর অর্থাৎ ২০২৭ সাল থেকে এলডিসি হিসেবে বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা বাংলাদেশের জন্য থাকবে না। প্রতিযোগিতা করে বিশ্ববাণিজ্যে টিকে থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট(বিএফটিআই) প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসায়ীদের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এখন বিশ্বের যে কোন দেশের সাথে বাংলাদেশ পেপার লেস ট্রেড করতে সক্ষম। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার এ সংক্রান্ত চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী মহোদয় স্বাক্ষর করেছেন। ব্যবসায়ীদের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য সহজ করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি তিন বছর পর পর দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিয়ে আমদানি ও রপ্তানি নীতি প্রণয়ন করে। ব্যবসায়িদের সুবিধার জন্য এবং আধুনিক ডিজিটাল পদ্ধতিতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সেবা হয়রানি ও দুর্নীতি মুক্ত করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর জিএসপি সার্টিফিকেট প্রদান, জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে রেজিষ্ট্রেশনের কাজ ও আমদানি-রপ্তানি অধিদফতরকে ডিজিটাল ও অটোমেশন করা হয়েছে। এখন ব্যবসায়ীগণ অতি সহজেই অফিসে বসেই ব্যবসা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতে পারেন। সময়োপযোগি এ সকল কার্যক্রম গ্রহণের ফলে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহজ হয়েছে এবং ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ সকল সফল ব্যবস্থাপনার কারণেই দ্রুত দেশের রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমার কথা, বাংলাদেশের উন্নয়ন, বিনিয়োগের পরিবেশ ও সরকারের সহযোগিতা বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করেছে। আগামীতে বাংলাদেশের বাণিজ্য দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে।

লেখক: সিনিয়র তথ্য অফিসার এবং
জনসংযোগ কর্মকর্তা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

Bootstrap Image Preview