Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মেয়ে হওয়ায় দ্বিতীয় সন্তানকে আছড়ে মারল বাবা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৭:৩৭ PM
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৭:৩৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


আশা ছিল প্রথম সন্তান ছেলে হবে। কিন্তু হয়েছে মেয়ে। এ নিয়ে মন খারাপ ছিল পুরো পরিবারের। এরপর দ্বিতীয় সন্তানও মেয়ে হওয়ায় আর রাগ সামলাতে পারেননি জন্মদাতা বাবা আব্বাস আলি। মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে আছড়ে হত্যা করেন মেয়েকে।

শুক্রবার রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সালারের সরমস্তিপুরের এই বর্ববরোচিত কাজ করেন আব্বাস আলী নামে এক পাষণ্ড। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তার খোঁজে বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি শুরু করেছে। এ ঘটনার পর হতভাগ্য শিশুর মা আমিনা বিবি বলেন, ‘এমন বাবার ফাঁসি চাই!’

এ পাশবিক শিশু ঘটনার পর প্রতিবেশিরা ফারহাকে প্রথমে নিয়ে যান গ্রামীণ হাসপাতালে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সেখান থেকে ওই রাতেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফারহাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়, শনিবার সেখানেই মারা যায় ফারহা।

আনন্দবাজার জানিয়েছে, দেড় বছর আগে কেতুগ্রামের আমিনাকে বিয়ে করেন আব্বাস আলী। বিয়ের পর তাদের একটি কন্যা সন্তান হয়। প্রায় ৬ মাস আগে আবারও একটি কন্যা সন্তান হয় ওই দম্পতির। নাম রাখা হয় ফারহা। এরপর আমিনার ওপরে অত্যাচার শুরু হয়। শুধু আব্বাস নয়, শ্বশুর বাড়ির সবাই তাকে নির্যাতন করতে থাকে। 

কয়েক দিন ধরেই জ্বর ভুগছিল ফারহা। মেয়েকে ডাক্তার দেখানোর জন্য আব্বাসের কাছে টাকা চাইতেই মারধর করা হয় আমিনাকে। শুক্রবার মেয়ের ওষুধ কেনার জন্য ফের টাকা চান আমিনা। এ সময় আব্বাস গালিগালাজ করতে করতে মায়ের কোল থেকে ফারহাকে ছিনিয়ে নিয়ে ‘এই নে ওষুধ কেনার টাকা’ বলেই ছোট্ট আছড়ে ফেলে উঠানে। তারপর বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় সে।

এ সময় মায়ের আহাজারি শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে প্রায় নিথর ফারহাকে নিয়ে যান গ্রামের হাসপাতালে। সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ। তবে চিকিৎসকদের কিছু করার ছিল না। ধীরে ধীরে মারা যায় ফারহা।

আমিনা বলেন, ‘প্রথম সন্তান মেয়ে হওয়ার পরও আমাকে নানা ধরণের কথা শুনতে হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় সন্তান হওয়ার পর সেটা অত্যাচারে পরিণত হয়। তবে কোনোদিনই ভাবিনি যে মেয়েটাকে এভাবে মেরে ফেলবে। আমি ওদের ফাঁসি চাই।’

এ ঘটনার পর কান্দির মহকুমা প্রশাসক অভীককুমার দাস বলেন, ‘খুবই হিংস্র ঘটনা। ছেলে-মেয়ে উভয়েই আমাদের চোখে সমান, জন্মের আগে থেকেই সরকারি হাসপাতালে সে ব্যাপারে সচেতন করা হয়। নিরন্তর প্রচার চলছে। তারপরেও এই অবস্থা!’

Bootstrap Image Preview