পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশনে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে সিলেটের বিশ্বনাথে এক সাংবাদিককে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) এএসআই জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ওই সাংবাদিক।
জানা গেছে, দৈনিক আমাদের নতুন সময় ও বিডিমর্নিংয়ের বিশ্বনাথ প্রতিনিধি পাভেল সামাদের ছোটবোনের পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের জন্যে নানা ত্রুটি দেখিয়ে কয়েকবার টাকা দাবি করেন জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার এএসআই জাকির হোসেন। পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে কোনো টাকা দিতে হয় না জানিয়ে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এই সাংবাদিক। এতে তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এএসআই জাকির। তথ্য যাচাই-বাচাই করেও তার তদন্ত রিপোর্ট দিতে অযথাই কালক্ষেপন করেন তিনি।
গত শনিবার পাসপোর্ট প্রস্তুত হয়েছে কিনা জানতে চেয়ে সাংবাদিকের বোন পাসপোর্ট অফিসে ক্ষুদেবার্তা পাঠালে তদন্ত রিপোর্ট এখনও তাদের কাছে পৌঁছেনি বলে অফিস থেকে তাকে জানানো হয়। এরপরই তিনি মোবাইল ফোনে কথা বলেন এএসআই জাকিরের সাথে।
কথার এক পর্যায়ে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে টাকা না দেয়ার প্রসঙ্গ টেনে জাকির বলেন ‘আপনার ভাইকে বলবেন পুলিশের সাথে যেন সাংবাদিকতা না দেখায়, পুলিশের কাজে যেন নাক না গলায়। আপনি কি জানেন আমরা সরকারি চাকরি করি।’ এসময় সাংবাদিকের বোন ‘আমার ভাই কি করছেন’-এমন প্রশ্ন করলে জাকির বলেন ‘আপনার ভাই সাংবাদিক। পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের জন্যে সে খরচপাতি দিবে না। আমি আপনার টাকা কেন দেব? আমি কি আপনার আত্মীয়? সবাই খরচ দেয় উনি কেন আমাদের খরচ দিবে না? উনি যদি আমার সাথে সাংবাদিকতার ভাব দেখায় তাইলে বলবেন ভবিষ্যতে যেন এটা আর না দেখায়। কারণ আমার চাকরি ৪০ বছর। আমি ৪০ বছর চাকরি করতে পারব। উনি আমাদের অফিস খরচের টাকাটাও দিবে না। পুলিশের কাছে রিপোর্ট আসলে রিপোর্টের সাথে টাকাও দিতে হয়। এটাই নিয়ম। উনি এই কাজটা ঠিক করে নাই।
আপনার ভাইকে বলবেন, আমি চাইলে আপনার রিপোর্ট নেগেটিভ দিতে পারতাম। এটা আমার একটা ক্ষমতা বলেন আর কাজ বলেন, আমি নেগেটিভ দিতে পারতাম।’ এ সময় পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে কিসের টাকা লাগে জানতে চান সাংবাদিকের বোন। উত্তরে জাকির বলেন, পুলিশ একটা তদন্ত করলে তার একটা খরচ লাগে। এটাকে বলে ‘কনভেন্স’। একটা পাসপোর্ট আসলে এটাকে অনলাইনে উঠিয়ে যাচাই-বাছাই করতে হয়। তার খরচ লাগে।
এ ব্যাপারে কথা হলে এএসআই জাকির হোসেন বলেন, এসব অভিযোগ সত্য নয়। এসময় তিনি একান্তে কথা বলার জন্যে সাংবাদিকদের কাছে সময় চান।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মাহবুবুল আলম বলেন, ভিকটিম বা তার কোনো প্রতিনিধি আমাদের কাছে এলে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখব।