সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রক্সি অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্র সাঈম মিয়া। প্রযুক্তি বিষয়ে জানাশোনা ভালো। ধীরে ধীরে হ্যাকিংয়ে দক্ষ হয়ে ওঠে। বিভিন্ন মানুষের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করে। ফেসবুক আইডি ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে কারো কাছ থেকে ২ হাজার, আবার কারো কাছ থেকে ৮০ হাজার পর্যন্ত টাকা নেয় সে। এভাবে ২৫৯ জনের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে প্রায় ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ফেসবুক ব্যবহারকারী একজনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাঈমকে গ্রেফতার করেছে ঢাকার সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ। গত বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) তাকে গ্রেফতার কারা হয়।
কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সাইবার সিকিউরিটি বিভাগের সহকারী কমিশনার আজহারুল ইসলাম মুকুল বলেন, ‘আটকের পর সাঈমের কাছ থেকে অনেকগুলো ফেসবুক আইডি উদ্ধার করা হয়েছে। সে নিয়মিত ফেসবুক আইডি হ্যাক করে অর্থ আদায় করতো। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করা হয়েছে।’
সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাঈম নিজের চেষ্টাতেই ধীরে ধীরে দক্ষ হ্যাকার হয়ে ওঠে। সে শ্যাডো ওয়েব ব্যবহার করে ফিশিং সাইট তৈরি করে বিভিন্ন ব্যক্তির মেসেঞ্জারে লিংক পাঠাতো। যারা ওই ফাঁদে পা দিয়ে ফিশিং সাইটে লগইন করতো তাদের ফেসবুক আইডি ও পাসওয়ার্ড চলে আসতো সাঈমের হাতে। তাৎক্ষণিকভাবে সে ওই ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড এবং সেটিংস টুলস পরিবর্তন করে আইডি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতো।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গ্রেফতার হওয়া সাঈম বাসায় বসে বসে হ্যাকিংয়ের কাজ করতো। তার কাছ থেকে ফেসবুক আইডি হ্যাক করার বিভিন্ন তথ্য ও ভিকটিমদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার ব্যাপারে মেসেঞ্জারের চ্যাটিংয়ের স্ক্রিনশট জব্দ করা হয়েছে।
সাঈমকে করা জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সাইবার সিকিউরিটি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, ফেসবুক আইডির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর প্রথমে পরিচিত বিভিন্ন ব্যক্তি ও স্বজনদের কাছে মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়ে টাকা ধার চাইতো। এভাবে টাকা না পেলে অশ্লীল ছবি, সম্মানহানিকর পোস্ট বা পরিবারের সদস্যদের ছবি এডিট করে পোস্ট দিতো।
পাশাপাশি মূল ব্যক্তিকে ফেসবুকের আইডি ও পাসওয়ার্ড ফেরত দেওয়ার জন্য অর্থ দাবি করতো। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেকেই সমঝোতা করে অর্থ দিয়ে আইডি ও পাসওয়ার্ড ফেরত নিতেন।