নওগাঁর মহাদেবপুরে বাম্পার ফলনের আশায় আলু ক্ষেতে পানি দেয়া, কীটনাশক প্রয়োগ, নিড়ানি দেয়াসহ ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।
তবে শ্রমিক সংকটের কারনে কৃষেকদের অধিক শ্রমমূল্য দিতে হচ্ছে। শ্রমিক প্রতি ২’শ ৫০ টাকা শ্রমমূল্য হলেও সংকটের কারনে ৩’শ থেকে ৩’শ ৫০ টাকা দিতে হচ্ছে। আলুর দাম নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকা সর্তেও কৃষকরা থেমে নেই আলু চাষ থেকে। আগাম লাগানো আমন ধান কর্তনের পর এখানকার কৃষকরা জমি পতিত রাখে না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় বছরের পর বছর যে জমিগুলো পড়ে থাকত গত কয়েক বছর ধরে সে জমিগুলোতে আগাম জাতের আলু চাষ করে বিপ্লব ঘটিয়েছে কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রত্যেক আলু চাষী অধিক মুনাফা লাভ করবে বলে মনে করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উল্লেখযোগ্য পরিমানে স্থানীয় ও উন্নত জাতের ষাঁটা আলু চাষ করেছে কৃষকরা। এই জাতের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট হচ্ছে, রোপনের মাত্র ৫৫-৬০ দিনের মধ্যে বাজারজাত করা যায়। ফলে বাজারে আলুর দাম ভাল পাওয়া যায়। বিগত বছরের মত এবার আলুর রোগ বালাই কম হওয়ার গাছ ভাল হয়েছে। ফলে বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকরা।
কৃষকদের মতে, ফলন ভাল হলে বিঘাপ্রতি ৩৫-৪০ মণ আলু পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩০ হাজার টাকা। আর ১ বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয় প্রায় ৮-৯ হাজার টাকা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১ হাজার ৬’শ ৭০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়। আর চাষ হয়েছে ৮’শ হেক্টর জমিতে। তবে এখনো কোন কোন মাঠে আলু রোপণ চলছে, ফলে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমের প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের কৃষক আরিফুল জানান, গত বছর হিমাগারে আলুর বীজ রেখে ভাল মানের বীজ পেয়েছেন। এ বছর ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করছেন। এখন পরিচর্যার কাজ চলছে।
একই গ্রামের কৃষক তারেক জানান, গত বছর ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে খরচ সেরে ২৫ হাজার টাকা লাভ করেছেন। আশা করছেন এবার তার চেয়ে বেশি লাভ হতে পারে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম প্রামাণিক জানান, প্রকৃতি চলতি মৌসুমে আলু চাষের অনুকূলে রয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্ষেতে রোগ-বালাইয়ের প্রকোপ নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে, শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারো বাম্পার ফলন হবে। এতে কৃষকরা অনেকটা লাভবান হবে।