Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঢাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা, জানা দরকার অন্যায়টা আসলে কার?

বিডিমর্নিং ডেস্ক-
প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০১৮, ১১:১৮ AM
আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮, ১১:১৮ AM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


গত ২৩শে নভেম্বর বিডিনিউজ24.কম- এ ‘ঢাবি আইবিএ’র শিক্ষক ধর্ষণ মামলায় কারাগারে’ শীর্ষক একটি সংবাদ আমার নজরে আসে। আমি ভিক্টিম কিংবা অভিযুক্ত শিক্ষক (আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকর্মী হওয়া সত্ত্বেও) কাউকেই ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। এই ধরনের সংবাদ পড়লে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় by default আমি ভিক্টিমের পক্ষে থাকি। তাই লিখেছিলাম ‘একজন বিবাহিত পুরুষ যখন ধর্ষক হয় তখন সেটা হয় ডাবল ক্রাইম। কারণ ভিক্টিম তখন দুইজন। ১. যাকে ধর্ষণ করেছে সে এবং ২. তার স্ত্রী, যার বিশ্বাসে সে চরম আঘাত করেছে। আর যখন সেই পুরুষটি শিক্ষক হয় সেটি আরো বড় ক্রাইম হয়।

কারণ শিক্ষকতা পেশার অন্য একটি মাত্রা আছে। এটা অন্যসব পেশার মত নয়।’ ওটা ছিলো আমার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া। কিন্তু আমার বাংলাদেশ হলো সব সম্ভবের দেশ। আজকে ২৯শে নভেম্বর। এরমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বরাতে আরো অনেক কিছু জানতে পেরেছি। জানলাম যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার সাবেক স্ত্রী একজন পুলিশ অফিসার।শুনছি তার শ্বশুর বর্তমানে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি, এবং জধন-এর সাবেক মহাপরিচালক। জানলাম, ঘটনার কয়েকদিন আগে অভিযুক্ত শিক্ষক সহকারি অধ্যাপক খালেদের ডিভোর্স হয়েছে। বিবাহ যেমন একটি পরারষরুবফ প্রক্রিয়া তেমনি ডিভোর্স একটি পরারষরুবফ প্রক্রিয়া। যেকোনো কারণেই হউক, দুইজন বিবাহিত মানুষ আর একসাথে না থাকার সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। পত্রিকার রিপোর্ট অনুসারে, তাদের মধ্যে নাকি বনিবনা হচ্ছিলো না।

ডিভোর্সের দু’সপ্তাহ পার না হতেই শিক্ষক খালেদের বিরুদ্ধে পরপর দুটি মামলা হয়েছে। একটি যৌতুকের। অন্যটি ধর্ষণের। ধর্ষণের মামলাটি করেন ধর্ষিতার স্বামী। ফলশ্রুতিতে তিনি এখন জেলে। শুধু তাই না তার পিতা-ও জেলে। আর শুনতে পাচ্ছি আর তার মা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এখানে বোঝা যাচ্ছে, বিষয়টা তলিয়ে দেখার সুযোগ আছে। এইসব জানার পর আমার মনে হয়েছে বিষয়টাকে গুরুত্বের সাথে দ্রুত তদন্তসাপেক্ষে সত্য উদঘাটিত হউক। এইরকম পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেরও এগিয়ে আসা উচিত। কারণ এটা গোটা শিক্ষক সমাজের মান মর্যাদার ব্যাপার। ঘটনা যদি সত্য হয় তাহলে যেমন শিক্ষকদের মর্যাদা ভুলুন্ঠিত হয়; তেমনি ঘটনা মিথ্যা হলেও শিক্ষকদের মর্যাদা ভুলুন্ঠিত হয়। কারণ এতে শিক্ষকদের কত সহজে মিথ্যা অভিযোগে নাজেহাল এবং অপমান করা যায় তা আরেকবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে সমাজকে দেখানো হয়।

শুনেছি সহকারি অধ্যাপক খালেদ অত্যন্ত মেধাবী একজন মানুষ। আলোচ্য ক্ষেত্রে সে মেধাবী কি অমেধাবী বিবেচ্য বিষয় নয়। এইসব আলোচনার মাধ্যমে কেবল সিম্পেথি অর্জনের চেষ্টা হিসাবেই দেখি। এখানে একমাত্র বিবেচ্য বিষয় হলো অন্যায়টা কার সেটি বস্তুনিষ্ঠভাবে খুঁজে বের করা।

সত্য উদ্ঘাটিত হউক! দোষীর উপযুক্ত শাস্তি হউক!

কামরুল হাসান মামুন, অধ্যাপক, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

Bootstrap Image Preview