রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত শীর্ষ সম্মেলন বাতিল হয়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে এই বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। এই সংকট রাশিয়ার সঙ্গে ‘পূর্ণ যুদ্ধ’ বাধিয়ে দিতে পারে ইউক্রেন এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করার পর ট্রাম্প এ মন্তব্য করলেন।
এদিকে মস্কো জানিয়েছে, তারা শিগগির অধিকৃত ক্রিমিয়ায় আরো অত্যাধুনিক এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েন করবে।
এ সপ্তাহের শেষ নাগাদ আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক করার কথা ছিল। তবে ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, পুরো বিষয়টিই নির্ভর করবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রাশিয়ার ইউক্রেনের জাহাজ জব্দ করা নিয়ে কী প্রতিবেদন দেবেন তার ওপর। ওয়াশিংটন পোস্টকে গত মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘আমি হয়তো ওই বৈঠকে বসব না।’
এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেংকো হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, দুই সাবেক সোভিয়েত প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। ‘আমি চাই না কেউ ভাবুক এটা নেহাতই ছেলেখেলা। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার হুমকির মধ্যে রয়েছে ইউক্রেন।’ তিনি জানান, ইউক্রেনের সঙ্গে সীমান্তে রাশিয়ার সেনা মোতায়েন ‘নাটকীয়ভাবে বাড়ানো’ হয়েছে। রাশিয়া গত রবিবার ইউক্রেনের ২৪ নাবিকসহ তিনটি জাহাজ জব্দ করার পর তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে গত মঙ্গলবার রাশিয়া অধিকৃত ক্রিমিয়ার প্রধান শহর সিফেরোপোলের আদালত আটক নাবিকদের মধ্যে ১২ জনকে দুই মাসে বিচারপূর্ব আটকাদেশ দিয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি আরো তিন নাবিককেও দুই মাসের আটকাদেশ দেওয়া হয়েছে। বাকিদের গতকাল বুধবার আদালতে হাজির করা হয়। এই পদক্ষেপ কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে দেবে। রাশিয়ার দাবি নাবিকরা ইউক্রেনের জলসীমা অতিক্রম করে রাশিয়ায় ঢুকে পড়ায় জাহাজগুলো জব্দ করা হয়েছে। কিয়েভ আটক নাবিকদের মুক্তি চেয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরো কঠোর করার দাবি জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর রাশিয়ার তৎপরতাকে ‘ভয়ংকর’ হিসেবে অভিহিত করে ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য তাদের ইউরোপীয় মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানায়।
এদিকে রাশিয়ার এক সামরিক কর্মকর্তা গতকাল জানান, মস্কো শিগগির ক্রিমিয়ায় আরো অত্যাধুনিক এ-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করবে। আরআইএ নভোস্তি সংবাদ সংস্থা জানায়, এ বছরের শেষ নাগাদ এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। ওই উপদ্বীপে আগে থেকেই তিনটি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন রয়েছে।
রাশিয়া ক্রিমিয়া দখলের পর সমুদ্রে এটিই প্রথম বড় ধরনের সংকট। ক্রিমিয়া সংকট নিয়ে ২০১৪ সালের পর থেকে অন্তত ১০ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে।