চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আজ, বুধবার, কার্যত মরণ-বাঁচন ম্যাচ তাদের। কিন্তু দলের প্রধান দুই তারকা নেমার দা সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র) এবং কিলিয়ান এমবাপের সুস্থতার উপরই লিভারপুলের বিরুদ্ধে প্যারিস সেন্ট জার্মানির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। এক দিকে ম্যাচটা নেইমার বনাম মো সালাহের দ্বৈরথ। আবার তেমনই গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, লিভারপুলের কাছে এই ম্যাচ হেরে গেলে নেইমারদের এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিযান গ্রুপ স্তরেই শেষ হয়ে যেতে পারে। ম্যাচটি শুরু হতে রাত ২টা। সরাসরি সম্প্রচার করবে সনি টেন ওয়ান।
তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে মঙ্গলবার দলটির দুই তারকা নেইমার ও এমবাপে দলের অনুশীলনে যোগ দেন। অনুশীলনে সময়টা তারা ভালোই পার করেছেন। দলটির ম্যানেজার থমাস থুকেন বুধবার চ্যাম্পিয়ন লিগের ম্যাচে নেইমার ও এমবাপের খেলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, নেইমার ও এমবাপে ম্যাচ খেলার জন্য ১০০ ভাগ ফিট আছেন। তারা দুজনেই লিভারপুল ম্যাচে ফিরবেন।
প্যারিসের এই ক্লাবটি বর্তমানে কুয়েতের ধনকুবেরদের মালিকাধীন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ভাল কিছু করার জন্য তারা প্রচুর খরচও করেছে। বার্সেলোনা থেকে নেইমারকে কিনেছে রেকর্ড অর্থে। নতুন কোচও আনা হয়েছে। কিন্তু ফরাসি লিগে ধারাবাহিকতা রক্ষা করলেও ইউরোপে সেরা প্রতিযোগিতায় তারা সব ম্যাচে সাফল্য পাচ্ছে না। গত সেপ্টেম্বরেই যেমন লিভারপুলের কাছে ২-৩ হেরে এসেছে পিএসজি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গত মাসে পিএসজি ৬-১ হারিয়েছে রেড স্টার বেলগ্রেডকে। তবে সেটা খুব বড় কোনও দলের বিরুদ্ধে নয় এবং বিচ্ছিন্ন একটা সাফল্য বলেই ধরা হচ্ছে। ক্লাব ফুটবলে বিশ্বের অন্যতম সেরা দল হিসেবে বিবেচিত হতে গেলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতো উচ্চ পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় যে ধারাবাহিকতা দেখাতে হবে, সেটা এখনও চোখে পড়েনি নেইমারদের খেলায়। এ বারই যেমন লিভারপুলের কাছে হার ছাড়াও তাঁরা নাপোলির সঙ্গে দু’টি ম্যাচই ড্র করেছেন। পিএসজি-র অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা যদিও বলেছেন, ‘‘অ্যানফিল্ডে গিয়ে আমরা কিন্তু জেতার মতো খেলেও ম্যাচ হেরেছিলাম। গড়পড়তা ফুটবল খেললে বড় ক্লাবের বিরুদ্ধে জেতা যায় না। এ বার নিজেদের মাঠে লিভারপুলের বিরুদ্ধে আমাদের সেরা খেলাটাই খেলতে হবে। এই ম্যাচের উপরই সব কিছু নির্ভর করছে। হারলেই আমরা ছিটকে যাব।’’
য়ুর্গেন ক্লপের ফুটবলারদের বিরুদ্ধে সেরা খেলার জন্য কতটা তৈরি পিএসজি? নেইমার আর এমবাপের চোট থাকায় সে প্রশ্নটাই সবার আগে উঠছে। এই দু’জন খেলেননি বলেই সম্ভবত ফরাসি লিগে শেষ ম্যাচে জিতেছে নামমাত্র গোলে। এই দুই ফুটবলার মিলে এ মরসুমে মোট ১৩টি গোল করেছেন। আর এদিনসন কাভানি একাই করেছেন মোট ১০টি গোল। তাই একটা মত হচ্ছে, দুই তারকার ছটায় কাভানির কৃতিত্ব গুরুত্ব পাচ্ছে না।
কোনও ভাবে এই ম্যাচটা জিততে পারলে পিএসজি নতুন অক্সিজেন পাবে। বিশেষ করে শেষ ম্যাচে রেড স্টারের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে। আর ক্রিসমাসের আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে গেলে সেটা হবে ক্লাবের কাছে আর একটা বড় ধাক্কা। এমনিতেই এই ক্লাবের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অনিয়মের অভিযোগের নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে উয়েফা। তাদের বিরুদ্ধে নতুন ও কিশোর প্রতিভা নেওয়ার সময় বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগও উঠেছে। পিএসজি যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে।