Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

শরিকদের যেসব আসন ছেড়ে দিতে হবে বিএনপির

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০১৮, ০৬:৩৪ PM
আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৮, ০৬:৩৪ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


ঘনিয়ে আসছে নির্বাচনের সময়। সকল দল-জোটগুলো তাদের প্রার্থী ঠিক করছে। ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ১৩০ আসনে তাদের প্রার্থী দিয়েছে। এ দিকে বিএনপি নানাভাবে বিবেচনা করে ঠিক করছেন প্রার্থী।

এ দিকে বিএনপির সাথে দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা ২০ দল ছাড়াও এখন ঐক্যফ্রন্ট মিলে হয়েছে ২৭ দল। জোটের ২৩ দল ও ঐক্যফ্রন্টের ৪ দল। এর বাইরেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন আইনজীবী, সাবেক সচিব, সাবেক সামরিক কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজ মিলিয়ে বেশ কয়েকজনকে মনোনয়ন দিতে চান।

সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে বিএনপির ভানায় দুই জোটের হেভিওয়েট প্রার্থীরা। কোনো কোনো আসনে দলীয় একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছে। এমনকি দুই জোটেরও একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছে কোনো কোনো আসনে।ওইসব আসনে বিএনপি একজনকে প্রার্থী করে বাকী একজনকে ঢাকা থেকে নির্বাচন করানোর কথা ভাবছে।

সকল সমীকরণ মিলিয়ে ঢাকায় ২০ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেশ কয়েকজনকে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিএনপির ঢাকার নেতারা মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারেন।

জানা গেছে, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ২০ দলকে ৩০ থেকে ৩৫ টি আসন দিতে চায় বিএনপি। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে ২০ থেকে ২৫ টি আসনে ছাড় দিতে চাইছে দলটি। বিএনপি চাইছে ২৫০ টি আসনে দলীয় প্রার্থী দিতে। বাকি ৫০ টি আসন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলকে ছেড়ে দিতে। ৫০ আসন নিয়ে সমঝোতা না হলে সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৬৫ টি আসন শরিকদের দিতে চায় বিএনপি।

২০ থেকে ৩০টি আসনে দুই শরিক দলগুলোর একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। যারা কেউ কাউকে সহজেই ছাড় দেবেন না বলে মনে হচ্ছে। ওইসব হেভিওয়েটদের কাকে বসিয়ে কাকে মনোনয়ন দেয়া হবে সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। কেউ বিদ্রোহ করে বসলে তা সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাই বিএনপি চাইছে শরিক দুই জোটের কয়েকজন হেভিওয়েট নেতাদের ঢাকায় মনোনয়ন দিতে।

সূত্র জানায়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন নির্বাচন করতে রাজি নন। দল ও জোট শরিকদের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচন করতে চাইলে ঢাকা অথবা ফেনীতে খালেদা জিয়ার একটি আসনে নির্বাচন করতে পারেন। তবে ড. কামালের মেয়ে ব্যারিস্টার সারা হোসেনকে ঢাকা-১২ আসন (তেজগাঁও-রমনা) ছাড়তে রাজি বিএনপি।

এ দিকে মোস্তফা মহসিন মন্টু তার এলাকা ঢাকা-২ অথবা ঢাকা-৩ আসন থেকে নির্বাচন করতে চান। ঢাকা-৩ আসন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নির্বাচনী এলাকা।

আবার ঢাকা-২ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানের নির্বাচনী এলাকা। দলের দুই প্রভাবশালী নেতাকে তাদের আসন থেকে মনোনয়ন দিতে চায় বিএনপি। মোস্তফা মহসিন মন্টু যদি ঢাকাও ওই দুটি আসনের কোনোটিতে নির্বাচন করতে অনঢ় থাকেন তবে বড় পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে বিএনপিকে। গয়েশ্বর রায় কিংবা আমানের মতো আজন্ম বিএনপি করা নেতাদের বসিয়ে দিতে হবে।

এ ছাড়া মন্টুকে ঢাকা-৭ আসনে মনোনয়ন দিলে দীর্ঘদিন কারা নির্যাতিত হয়ে মারা যাওয়া নাসিরউদ্দিন পিন্টুর পরিবারের প্রতি অবিচার করা হবে। এমন ভাবনাও আছে বিএনপি নেতৃত্বের মধ্যে।

আবার গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী চট্টগ্রাম-১৪ বা ঢাকা-৬ (কোতোয়ালি-সূত্রাপুর) আসনে মনোনয়ন চান। এর মধ্যে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৪ আসন থেকে ২০ দলের শরিক এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ এবং ঢাকা-৬ আসন থেকে সাদেক হোসেন খোকা মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এবার খোকার পরিবর্তে তার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনসহ ১১ জন মনোনয়ন চেয়েছেন। কর্নেল অলি ২০০৮ সালের নির্বাচনে দুটি আসন থেকে নির্বাচন করেন। এবার সুব্রতকে চট্টগ্রামে দিলে অলিকে ছাড় দিতে হবে। তবে ২০ দলের এই শীর্ষ নেতা অলিকে বিএনপি চট্টগ্রাম-১৪ আসন দিতে চায়।তাই সুব্রতকে ঢাকা-৬ ছেড়ে দিতে আগ্রহী বিএনপি।সেক্ষেত্রে খোকার ছেলে ইশরাক বঞ্চিত হবেন।

জেএসডির তানিয়া রব ঢাকা-১৮ (উত্তরা) আসন থেকে নির্বাচন করতে চান। বিএনপিও তাকে এ আসন ছাড়তে রাজি বলে জানা গেছে। এ আসন থেকে বিগত নির্বাচনে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল নির্বাচন করেছিলেন। এবার মহানগর যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর হোসেনসহ ১২ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে বৃহত্তর স্বার্থে শেষ পর্যন্ত এই আসনটি তানিয়া রবকে দেয়া হতে পারে।

বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৮ আসনে নির্বাচন করতে চান।ওই আসনে বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী। তাই কাদের সিদ্দিকী রাজি থাকলে ঢাকা-১৩ (মোহাম্মদপুর-আদাবর) আসন ছাড়ার চিন্তা করছে বিএনপি। এ আসনে বিএনপির চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামসহ ১৪ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী।

এদিকে ২০ দলের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীও ঢাকা-১৫ আসন চেয়েছে বিএনপির কাছে। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান সেখানে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ আসনে বিএনপি থেকে ড. আসাদুজ্জামান রিপন, যুবদলের মামুন হাসানসহ ১৩ জন মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন।তবে জামায়াতকে শেষ পর্যন্ত ঢাকায় কোনো আসন দেয়া নাও হতে পারে।

তবে আসন ভাগাভাগির ক্ষেত্রে প্রার্থীর সকল দিক বিবেচনা করবে বিএনপি। ইচ্ছেমতো প্রার্থী ঠিক করার সুযোগ নেই। দলটির বড় বড় নেতারাও একই কথা বলছেন। তাই বিএনপিকে পড় পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে এবার।

Bootstrap Image Preview