Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ‘রাস উৎসব’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০১৮, ০৬:১১ PM
আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮, ০৬:১৩ PM

bdmorning Image Preview


সুন্দরবনের দুবলার চরে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ‘রাস উৎসব’। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এ উৎসবে ইতোমধ্যে মুখরিত হয়ে উঠেছে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চরের আলোরকোল।

আজ বুধবার (২১ নভেম্বর) সকাল থেকেই পুণ্যার্থী, দর্শণার্থী ও পর্যটকরা সুন্দরবনের দুবলার চরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন।

কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে শিবসা নদী-মরজাত হয়ে দুবলার চর। নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর। ঢাংমারী অথবা চাঁদপাই স্টেশন হয়ে পশুর নদী দিয়ে দুবলারচর। বগী-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর এবং শরণখোলা স্টেশন-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর। এ সকল পথে বন বিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল দল নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।

এবারের রাস পূর্ণিমায় আগত পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট হতে প্রাপ্ত সনদপত্র সাথে রাখতে হবে। পরিবেশ দূষণ করে এমন বস্তু, মাইক বাজানো, পটকা ও বাজি ফোটানো, বিস্ফোরক দ্রব্য, দেশীয় যে কোনো অস্ত্র এবং আগ্নেয়াস্ত্র বহন থেকে যাত্রীদের বিরত থাকতে হবে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থানের সময় টোকেন ও টিকেট নিজের সঙ্গে রাখতে হবে।

উল্লেখ্য, রাস যাত্রা সনাতন ধর্মালম্বীদের একটি বাৎসরিক উৎসব। রাস মূলতঃ শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলার অনুকরণে বৈষ্ণবীয় ভাবধারায় অনুষ্ঠিত ধর্মীয় উৎসব। ভগবান কৃষ্ণের রসপূর্ণ অর্থাৎ তাত্ত্বিক রসের সমৃদ্ধ কথাবস্তুকে রাসযাত্রার মাধ্যমে জীবাত্মার থেকে পরমাত্মায়, দৈনন্দিন জীবনের সুখানুভূতিকে আধ্যাত্মিকতায় এবং কামপ্রবৃত্তিসমূহকে প্রেমাত্মক প্রকৃতিতে রূপ প্রদান করে অংকন করা হয়েছে।

ভারতের উত্তরপ্রদেশের মথুরা ও বৃন্দাবনে, পশ্চিমবঙ্গের নদীয়াসহ ওড়িশা, আসাম ও মণিপুরে রাসযাত্রার উৎসব বিশেষভাবে উদযাপিত হয়। এই উৎসবের অংশ হিসেবে গোপিনীবৃন্দ সহযোগে রাধা-কৃষ্ণের আরাধনা এবং অঞ্চলভেদে কথ্থক, ভরতনাট্যম, ওড়িশি, মণিপুরি প্রভৃতি ঘরানার শাস্ত্রীয় ও বিভিন্ন লোকায়ত নৃত্যসুষমায় রাসনৃত্য বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। প্রতিবছর কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দুবলার চরে রাসমেলা অনুষ্ঠিত হয়।

দুবলার চর সুন্দরবনের মাঝে জেগে ওঠা বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ বা চর। সাগরের কোলঘেঁষা এ চরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে কুঙ্গা ও মরা পশুর নদী। ১৯২৩ সালে হরিচাঁদ ঠাকুরের বনবাসী ভক্ত হরিভজন এ মেলা শুরু করেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবতা শ্রীকৃষ্ণ শত বছর আগে কার্তিকের পূর্ণিমা রাতে পাপমোচন ও পুণ্যলাভের আশায় গঙ্গাস্নানের জন্য স্বপ্নে আদেশ পান। তখন থেকেই এ মেলার শুরু। আবার অনেকে মনে করেন, শ্রীকৃষ্ণ বনবাসী গোপীদের সঙ্গে রাসলীলা করেছিলেন এ কার্তিকের পূর্ণিমা রাতে। সে উপলক্ষেই এ মেলা। অসংখ্য সনাতন ধর্মাবলম্বী অংশ নেন এ মেলায়।

Bootstrap Image Preview