Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিনাধান-১৬ উৎপাদনে নতুন রেকর্ড 

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০১৮, ০৭:২৯ PM
আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৮, ০৭:২৯ PM

bdmorning Image Preview


হেমন্ত বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত নতুন জাতের স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন বিনাধান-১৬ আমন মৌসুমে উৎপাদনে নতুন রেকর্ড গড়েছে।

গত বুধবার বিকেলে কাশিয়ানী উপজেলার পশ্চিম মাঝিগাতি গ্রামের কৃষক হুমায়ূন খন্দকারের জমিতে উৎপাদিত বিনাধান-১৬ কেটে পরিমাপ করে মাঠ দিবস থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র আয়োজিত এ মাঠ দিবসে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) ফরিদপুর অঞ্চলের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মহিউদ্দিন, গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের ডিডি সমীর কুমার গোস্বামী, জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্রসহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন। এতে সভাপতিত্ব করেন গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শেফাউর রহমান।

গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র জানিয়েছে, এ বছর এ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে গোপালগঞ্জ জেলার ১০০ একর জমিতে ৩00টি প্রদর্শনী প্লটে এ ধানের আবাদ করা হয়েছে। স্বল্প মেয়াদকাল সম্পন্ন এ জাতের ধান রোপনের ১শ' দিনের মাথায় কাটা হয়েছে। মাঠ দিবসে এসব প্রদর্শনী প্লটের ধান কেটে পরিমাপ করে প্রতি হেক্টরে এ ধান ৬.৬৯ টন ফলন পাওয়া গেছে। আমন মৌসুমে প্রচলিত জাতের তুলনায় এটি সবচেয়ে বেশি ফলন দিয়ে দেশে নতুন রেকর্ড করেছে। এর আগে এ ধান হেক্টরে ৫.৯৭ টন ফলেছে বলে ওই উপকেন্দ্র জানিয়েছে।

গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার পশ্চিম মাঝিগাতি গ্রামের কৃষক হুমায়ূন খোন্দকার বলেন, এ বছর আমি বিনা ১৬ জাতের ধান আবাদ করেছি। প্রচলিত আমনের তুলনায় এ ধান রেকর্ড পরিমান ফলন দিয়েছে। এ ধান প্রচলিত আমনের ১ মাস আগে কাটা যায়। বাজারে ধানের দাম ভালো পাওয়া যায়। এ ধানের আবাদের পর সরিষা, কলাই বা মসুরের আবাদ করা যায়। আগে আমরা বছরে ২টি ফসল পেতাম। কিন্তু এ ধানের বদৌলতে একই জমিতে বছরে ৩ ফসল ফলিয়ে আমরা ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারবো। এতে আমাদের লাভ হবে।

একই গ্রামের কৃষক খন্দকার সিদ্দিক বলেন, প্রচলিত জাতের ধান চাষে লাভ নেই। স্থানীয় আমনে রোগবালাই দেখা দেয়। কিন্তু বিনাধান-১৬ জাতে কোন রোগ বালাই নেই। কারেন্ট পোকা আক্রমণ করে না। তাই কীট নাশক খরচ লাগে না। ধান হেলে বা ঝড়ে পড়ে না। অধিক ফলন দেয়। এ জাত চাষ করে আমরা লাভের মুখ দেখেছি।

কাশিয়ানী উপজেলার সমসপুর গ্রামের কৃষক মঞ্জুর হোসেন শেখ বলেন, ক্ষেতে উৎপাদিত ধান থেকেই এ ধানের বীজ পরবর্তী বছরের চাষাবাদের জন্য সংরক্ষণ করা যায়। এ ধানের চাল চিকন ও ভাত খেতে সুস্বাদু। এসব কারণে আমরা আমন মৌসুমে এখন থেকে বিনাধান-১৬ আবাদ করবো।

গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শেফাউর রহমান বলেন, লাভজনক শস্য বিন্যাস উদ্ভাবন কর্মসূচীর আওতায় গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে ও কৃষি সম্প্রসারণের সহযোগিতায় গোপালগঞ্জে বিনাধান-১৬ আবাদ করে কৃষক আমন মৌসুমে সব রেকর্ড ভঙ্গ করে হেক্টরে সর্বোচ্চ ৬.৬৯ টন ধান উৎপাদন করেছে । এটি দেশের সর্বোাচ্চ ফলন।

গত বছর এ ধান ৫.৯৭ টন ফলে ছিলো। স্বল্প জীবন কালের এ ধান ক্ষেত থেকে কাটার পর কৃষক একই জমিতে আরো ২টি ফসল ফলাতে পারবেন । এতে গোপালগঞ্জে ফসলের নীবিরতা বৃদ্ধি পেয়ে কৃষকের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটবে।

কৃষি গবেষণা ইনষ্টিউটের (বারি) ফরিদপুর অঞ্চলের সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মহিউদ্দিন বলেন, গোপালগঞ্জের মাটি খুবই উর্বর। এ জেলার মাটিতে ধান উৎপাদনের সব ধরণের উপাদান বিদ্যমান । ধানে পোকার আক্রমণ কম হয়। এ কারণে এখানে ধানের ফলন বরাবরই ভালো হচ্ছে। এ ধান লাভজনক শস্য বিন্যাসে কৃষককে সহায়তা করছে।

 

Bootstrap Image Preview