Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনকালীন রুপরেখা, ২০১৯ সালের মার্চে নির্বাচনের দাবি

বিডিমর্নিং ডেস্ক-
প্রকাশিত: ০৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:৫৭ AM
আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:৫৭ AM

bdmorning Image Preview


প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সাত দফার আলোকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশীদারত্বমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চারটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত লিখিত দিয়েছে দ্বিতীয় দফার সংলাপে। একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের রূপরেখা দিয়েছে তারা। সেখানে তারা ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে বা মার্চে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায়।

বুধবার সকালে গণভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপ হয়। এর আগের সংলাপটি হয়েছিল ১ নভেম্বর। সেখানে ফলপ্রসূ কিছু না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয়বার সংলাপ চেয়েছিল ঐক্যফ্রন্ট।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা এনে তা পুনর্গঠন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে পদত্যাগের কথা বলেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। সমঝোতার ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য নতুন নির্বাচন কমিশন সচিবও নিয়োগ চায় ঐক্যফ্রন্ট।

‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি জন্য খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দীদের জামিনে মুক্তি এবং সরকার পক্ষ যেন জামিনের বিরোধিতা না করে, সে কথা ঐক্যফ্রন্ট তৃতীয় প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে। সভা-সমিতির অবাধ সুযোগ নিশ্চিত করার কথাও বলেছে। ঐক্যফ্রন্ট আরও বলে, বাকস্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং চিঠিপত্র, টেলিফোন ও মোবাইলের কথাবার্তা ফাঁস করার মতো কার্যক্রম থেকে বিরত থাকাসহ দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। ইভিএম ব্যবহার না করা, সেনাবাহিনী মোতায়েন ও বিচারিক ক্ষমতা এবং নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত পরামর্শ করতে হবে।

ঐক্যফ্রন্ট তাদের রূপরেখায় প্রথমেই নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার কথা বলেছে। সেখানে তারা জানায়, সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদে সংসদ ভেঙে দেওয়ার প্রসঙ্গ আছে। সংবিধানের ১২৩ (৩) (খ) অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী নভেম্বরের শেষে অথবা ডিসেম্বরে রাষ্ট্রপতিকে বর্তমান সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন। সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করবে নির্বাচন কমিশন। সে হিসেবে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে বা মার্চে অনুষ্ঠিত হতে পারে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ঐক্যফ্রন্ট জানায়, সরকার এ প্রক্রিয়া মেনে নিলে সব দলের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি হবে।

চতুর্থ প্রস্তাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে একজন উপদেষ্টা ও ১০ সদস্যের উপদেষ্টাবিশিষ্ট নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব দেয়। তবে বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সংলাপেই এ প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়। ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাবের জবাবে আওয়ামী লীগ বলেছে, এটা সংবিধানসম্মত না। এই দাবি মেনে নিলে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে। সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, প্রধান উপদেষ্টা ও ১০ জন উপদেষ্টার বিষয়ে প্রস্তাব মানা হবে না, কারণও নেই।

প্রধানমন্ত্রী ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করা হবে বলে ঐক্যফ্রন্টকে জানিয়েছেন। এ ছাড়া নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তার না করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দেন। সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হবে না। তবে তাদের মোতায়েন করা হবে, সেটাও জানায় আওয়ামী লীগ।

গত অক্টোবর মাসে জোট বাঁধা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৭ দফা ও ১১টি লক্ষ্যের কথা জানিয়ে আসছিল। ৭ দফা দাবি নিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীকে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিলে প্রধানমন্ত্রী তাতে সাড়া দেন। আওয়ামী লীগ ও ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে প্রথম সংলাপাটি হয় ১ নভেম্বর। তবে সে সংলাপে ফলপ্রসূ হয়নি জানিয়ে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট দ্বিতীয় দফা সংলাপের জন্য বসে। তবে এ সংলাপের অর্জন ও ফলপ্রসূ বিষয়ে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংলাপ শেষ সাংবাদিকদের জানান, আরও আলোচনা হবে। আওয়ামী লীগও জানায়, অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হতে পারে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংলাপ ও আন্দোলন কর্মসূচি একই সঙ্গে চালিয়ে যেতে চাচ্ছে। আগামীকাল তারা রাজশাহীতে সমাবেশ করবে বলে জানিয়েছে।

সংলাপ শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের জানান, আলোচনার মাধ্যমে দাবি আদায় না হলে তাঁরা আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করবেন।

Bootstrap Image Preview