Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাজারে শীতের সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও প্রভাব নেই দামে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ০৩:০৪ PM
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ০৩:০৪ PM

bdmorning Image Preview


দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। ইতোমধ্যে শীতের সবজিতে ভরে গেছে রাজধানীর বাজারগুলো। বাজারে শীতের সবজির ভরপুর সরবরাহ থাকলেও প্রভাব পড়েনি দামে।

আজ মঙলবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, হাতিরপুল বাজার, মিরপুর-৬ নং বাজার, মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বাজার ঘুরে এখা গেছে, ফুলকপি, বাধাঁকপি, লাউ, নতুন আলু, দেশি টমেটো, মৌ-শিম, শিম ও নানা রকম শাকসবজির পর্যাপ্ত পরিমাণ সরবরাহ রয়েছে। তবে সরবরাহ ভালো থাকলেও মধ্যসত্বভোগীদের কারসাজিতে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে শীতের সবজি।  সরবরাহ ভালো থাকলেও কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ফায়দা লুটছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে এখনো পুরোপুরিভাবে শীতের সবজি আসেনি। বাজারে পুরোদমে শীতের সবজি আসতে শুরু করলে কমবে সবজির দাম। রাজধানীর কারওয়ানবাজারে গিয়ে দেখা গেছে পুরো বাজার ছেয়ে গেছে শীতের সবজিতে। দামও তুলনামূলকভাবে অন্যান্য বাজার চেয়ে কম। কারওয়ানাবাজারে প্রতি কেজি দেশি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১১০ টাকায়। অথচ একই টমেটো হাতিরপুল বাজার ও মিরপুর-৬নং বাজারসহ অন্যান্য বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়।

জানতে চাইলে হাতিরপুল বাজারের ব্যবসায়ী ঝিনুক বিডিমর্নিংকে বলেন, কারওয়ানবাজারের সাথে হাতিরপুল বাজারের তুলনা দিয়ে লাভ নাই। ওটা পাইকারি বাজার দাম কিছুটা কম থাকবেই। আমাদেরতো আর পাইকারি বাজার না।

তিনি আরো বলেন, পাঁচ কেজি টমেটো কিনলে ৫০০ গ্রাম পঁচা বের হয়। এটার দাম দিবে কে? তাছাড়া যাতায়াত ভাড়া ও আনুষাঙ্গিক সবকিছু মিলিয়েই দামের উপর প্রভাব পড়ে। তবে পুরোপুরি শীত পড়লে পাইকারি বাজারে দাম আরও কমবে৷ তখন এর প্রভাব আমাদের বাজারেও পড়বে।

তিনি বলেন, শিমের দাম কিছুদিন আগে বেশি ছিল। কিন্তু এখন কারওয়ানবাজারসহ পাইকারি বাজারে ভরপুর সরবরাহের কারণে অনেকটাই কমেছে শিমের দাম। একইভাবে অন্যান্য সবজির সরবরাহ বাড়লে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে দাম।

এদিকে বাজারে প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। অথচ সেই একই লাউ কারওয়ানবাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। প্রতি কেজি নতুন আলু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়। আর কারওয়ানবাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। নতুন আলুর উৎপাদন খরচ মাত্র ৮ টাকা ১৩ পয়সা এবং কৃষকদের কাছ সেই আলু প্রতি কেজি আনা হচ্ছে ১৩ থেকে ১৫ টাকা।

নতুন আলু কেনো এতো বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে মিরপুর-৬ নং বাজারের ব্যবসায়ী কামাল বিডিমর্নিংকে বলেন, আমরা যেমন দামে কিনে আনি তেমন দামেই বিক্রি করি। আমরা খুব বেশি একটা লাভ করতে পারি না। যারা সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে আনে তারাই মূলত দাম বাড়ানোর জন্য দায়ী।

তিনি বলেন, দাম বাড়ানোর পিছনে আমাদের কোনো হাত নাই। প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। আর প্রতি পিস বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। এদিকে মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি শিমে কমেছে ১০০ টাকা। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। প্রতি কেজি মৌ-শিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। যা সপ্তাহখানেক আগেও প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বাজারে পর্যাপ্ত সবজি থাকলেও কেনো বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে মিরপুর-৬নং বাজারের ব্যবসায়ী লাল মিয়া বিডিমর্নিং বলেন, বাজারে সবজির দাম আগের থেকে অনেক কম। সবজির দাম আরও কমবে। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে বাজারে শীতের সবজির দাম আরও কমবে।

কারওয়ানবাজারে বাজারে বাজার করতে আসা গৃহিণী মনি আক্তার বিডিমর্নিংকে বলেন, বিগত বছরগুলোর তুলনায় বাজারে শীতের সবজির দাম অনেক বেশি। বাজারে শীতের সবজিতো পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে কিন্তু তারপরও সবজির দাম কেনো কমছে না সে বিষয়ে সরকরারের মনিটরিং করে দেখা উচিত।

হাতিরপুল বাজারে আসা আরেক গৃহিণী নারগিস বিডিমর্নিংকে বলেন, শীতের সব সবজির দামই বেশি। শুধুমাত্র শিমের দাম কিছুটা কমেছে। তিনি বলেন, রাজধানীতেই সবজির দাম বেশি কিন্তু রাজধানীর বাইরে সবজির দাম অনেক কম। তিনি বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজির কারণে আমরা প্রতারিত হচ্ছি। এই প্রতারক চক্রকে থামানো না গেলে কখনোই বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে না।

Bootstrap Image Preview