Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

সোহরাওয়ার্দীতে জনসভার ব্যাপক প্রস্তুতি ঐক্যফ্রন্টের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:৫৫ AM
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:৫৫ AM

bdmorning Image Preview


বিরোধী দলীয় জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো রাজধানীতে উন্মুক্ত জনসভা হতে যাচ্ছে আজ (মঙ্গলবার)। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠেয় এই জনসমাবেশে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, ইসি পুনর্গঠন ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ৭ দফা দাবিতে বেলা ২টা থেকে এ জনসভা শুরু হবে। এতে সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন এবং সভাপতিত্ব করবেন ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ঢাকা মহানগর পুলিশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐক্যফ্রন্টকে সমাবেশের অনুমতি দেয় গতকাল দুপুরে। সমাবেশের আগে মাত্র ২৪ ঘণ্টা সময় হাতে পেলেও এতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটানোর প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলো। বিশেষ করে বিএনপি ও এর অঙ্গ  সংগঠনের নেতারা সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিতের মাধ্যমে রজধানীতে বড় ধরনের শোডাউন করতে চায়।

বেলা ২টা থেকে জনসভা শুরু হলেও ঢাকা ও আশেপাশের জেলাগুলো থেকে নেতাকর্মীরা রাজধানীতে দুপুর ১২টার মধ্যে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৫ নভেম্বর) রাতে মতিঝিলে বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের চেম্বারে দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপ ও জনসভার প্রস্তুতি নিয়ে ঐক্যজোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে বৈঠক উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নেতা মওদুদ আহমেদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের মহাসচিব মোস্তফা মহসিন মন্টু ও প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ঐক্যপ্রক্রিয়ার নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এবং আরও অনেকে।

বৈঠক শেষে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, ৭ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা থেকে আগামী দিনের আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

তিনি বলেন, আজকের বৈঠক ঐক্যফ্রন্ট নেতারা সরকারের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার সংলাপে অংশগ্রহণের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছে। মঙ্গলবার আবার বৈঠক হবে, তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সম্মিলিতভাবে নেওয়া এই সিদ্ধান্ত জানানো হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায়।

এর আগে মঙ্গলবারের জনসভায় ব্যাপক জনসমাগম ঘটানোর উদ্দেশ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা ও তার আশেপাশের জেলার শীর্ষ নেতাদের নিয়ে যৌথসভা করে দলটি। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ওই যৌথসভা থেকে আজকের জনসভায় সর্বোচ্চ জনসমাগম ঘটানোর বিষয়ে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়।

যৌথসভায় নির্দেশনা দেয়ার পর ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা এবং দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সমাবেশের দিন গাড়ি বন্ধ থাকাসহ বিভিন্ন ধরনের বাঁধার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কায় ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলো থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা ইতিমধ্যে অনেকেই ঢাকায় পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে। বাকিরা সকালের মধ্যে পৌঁছে যাওয়ার কথা রয়েছে। দুপুর ২টা থেকে এ জনসভা শুরু হবে।

ঐক্যফ্রন্টের এই জনসভায় বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের জামায়াত বাদ দিয়ে অন্য শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া বিকল্প ধারা বাংলাদেশের একাংশ এই জনসভায় অংশগ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন এই দলের মহাসচিব অ্যাডভোকেট বাদল।

জনসভার প্রস্তুতি সম্পর্কে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু গণমাধ্যমকে বলেন, প্রস্তুতির জন্য মাত্র ২৪ ঘণ্টা সময় পেয়েছি। তার পরও আমাদের আশা জনসভা জনসমুদ্রে রূপান্তরিত হবে। ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলার মধ্যে নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলা এবং এসব জেলার সব উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায় থেকে নেতাকর্মীদের ঢল নামানো হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। ঢাকা মহানগর বিএনপি ও কেন্দ্রীয় অঙ্গ সংগঠনের নেতাদেরও সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকার যে খেলা করে এটা আমাদের নেতাকর্মীরা জানে। তারা ৬ ঘণ্টা আগেও আমাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেয়- সেটা আমাদের জানা আছে। মঙ্গলবারের জনসভার ব্যাপারে এবার এক সপ্তাহ আগে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। যারা সমাবেশে আসার তারা এ কয়দিনে ইতিমধ্যে ঢাকায় এসে গেছে। যারা আসেনি তারা আজ রাতের মধ্যে ও সমাবেশের আগে আগে পৌঁছে যাবেন।

এর আগে গত ২ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী অথবা বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। জনসভার জন্য অনুমতি চাইতে গেলে সেদিন অনুমতি না দিয়ে আজ ৬ই নভেম্বর জনসভার আবেদন করার পরামর্শ দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। পরে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সমাবেশের দিন পরিবর্তন করে ৬ই নভেম্বরের ঘোষণা দেয়া হয়।

এদিকে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার অনুমতি পায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের জনসভা করার অনুমতি দেয়।

Bootstrap Image Preview