Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

শেখ হাসিনাতে আপত্তি নেই, ৩ দফাই ঐক্যফ্রন্টের ‘প্রধান লক্ষ্য’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:০২ PM
আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:০২ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের দ্বিতীয় সংলাপ আগামী বুধবার (৭ নভেম্বর) হতে যাচ্ছে। ওই দিন বেলা ১১টায় গণভবনে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংলাপে বসতে চেয়ে চিঠি পাঠায়। রাতেই তাদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে শেখ হাসিনার সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সাড়ে তিন ঘণ্টা সংলাপ হয়। সংলাপের আলোচনায় নিজেদের 'অসন্তুষ্টি'র কথা জানিয়েছিল ঐক্যফ্রন্টের বড় শরিক দল বিএনপি।

তবে সংলাপের পর থেকে সরকারি দল ও বিরোধী জোট অনেকটা কথা বলছেন নমনীয় সূরে । জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে সাত দফা দাবি দিয়েছিল বুধবারের সংলাপে সেখান থেকে অনেকটা সরে আসতে পারে এ রাজনৈতিক জোট।

যেমন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারে আপত্তি নেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের। তবে এই রাজনৈতিক জোট তিনটি দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরবে। ১. সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ভোট গ্রহণ। ২. নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট কোটায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা সংসদের বাইরের বিরোধী দলগুলো থেকে মন্ত্রী করে তাঁদের স্বরাষ্ট্র বা জনপ্রশাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় দেওয়া। ৩. বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি ও তাঁর ভোটে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সাজা স্থগিত করা।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একটি দায়িত্বশীল সূত্র গণমাধ্যমকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। ওই সূত্র বলছে, ৭ দফা দাবির বাকিগুলোর মধ্যে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে তাঁরা শিথিল থাকবেন। সরকার সংসদ ভেঙে নির্বাচন দেওয়ার দাবি মানলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিষয়টিতে ঐক্যফ্রন্ট অনড় থাকবে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও বিএনপির একজন আইনজীবী নেতা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আমাদের লক্ষ্য সরকারকে এটা জানানো যে সংবিধানের মধ্য থেকে নির্বাচনের অনেক উপায় আছে, যা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ করতে এবং সব রাজনৈতিক দলের আস্থা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। কেননা, সরকার বলছে, সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো পন্থা বের করা বা সংবিধান সংশোধন তারা করবেন না।

প্রসঙ্গত, গতকাল রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের মতিঝিলের চেম্বারে একটি বৈঠক হয়। সেখানে আইনজ্ঞ, আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকে সংবিধান ও আইনের ভিত্তিতে ৭ দফার বিভিন্ন দাবিগুলোর যৌক্তিক তা নিয়ে আলোচনা হয়।

উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ৭ দফা দাবি পেশ করে। ঐক্যফ্রন্টের দাবিগুলো হলো:

১. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, আলোচনা করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।

২. গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

৩. বাক্, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা এবং নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

৪. কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন, সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মতপ্রকাশের অভিযোগে ছাত্রছাত্রী, সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তাসহ সব কালো আইন বাতিল করতে হবে।

৫. নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করতে হবে।

৬. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে ভোটকেন্দ্র, পুলিং বুথ ও কন্ট্রোলরুমে তাদের প্রবেশের ওপর কোনো ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ না করা। নির্বাচনকালীন গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর যে কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে।

৭. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা এবং নতুন কোনো মামলা না দেয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

Bootstrap Image Preview