Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বেশি টাকায় ভাড়ায় যাচ্ছে সিএনজি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০১৮, ১১:৪৫ AM
আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮, ১১:৪৬ AM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার টানা ধর্মঘটে রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। সকাল হতেই অফিস, কর্মস্থল ও গন্তব্যে বের হওয়া মানুষগুলোকে চরম দুর্ভোহ পোহাতে হচ্ছে। রাজধানীতে কেবল বিআরটিসি বাসই এখন একমাত্র ভরসা। তবে সেগুলো সব রুটে যেমন চলে না, তেমনি বাসের সংখ্যাও অনেক অপ্রতুল। এই অবস্থায় গন্তব্যে যাওয়ার জন্য বাধ্য হয়ে বেশি টাকায় যেকোন বাহনে যাচ্ছে রাজধানীবাসী। আর এই সুযোগ নিচ্ছে সিএনজিগুলো। গন্তব্যে মানুষের শেষ ভরসা এখন রিকশা আর সিএনজি।

রাজধানীর বিভিন্ন রুটে সিএনজি চালকরা জনপ্রতি বেশি টাকা নিয়ে যাত্রী নিচ্ছে। রাজধানীর শাহবাগ থেকে  ‘এয়ারপোর্ট, উত্তরা, আবদুল্লাহপুর জনপ্রতি ১০০ টাকা করে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে সিএনজি চালকরা। গতকাল এবং আজ সোমবার সকাল থেকে এই চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর ধানমন্ডি, লালবাগ, আজিমপুর, নিউমার্কেট, শাহবাগ ও কলাবাগান ঘুরে দেখা গেছে গতকাল ধর্মঘটের প্রথম দিন রাস্তায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা দেখা না গেলেও আজ সীমিত পরিসরে এ বাহনটি রাস্তায় নেমেছে।

তবে যাত্রীরা জানিয়েছেন, গণপরিবহন না থাকায় সিএনজি চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া হাঁকছেন। গতকালের মতো আজও গণপরিবহন বলতে সরকারি বিআরটিসি বাস। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বাস রাস্তায় নামেনি। ফলে বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্বাভাবিক পরিস্থিতিতেই ঢাকার রাস্তায় সিএনজি চালকরা ভাড়া হাঁকেন তাদের ইচ্ছেমতো। মিটার ও স্বল্প দূরত্বে যেতে নারাজ অধিকাংশ চালক। এর উপরে পরিবহন ধর্মঘটের সুযোগে আজ আরও চড়া ভাড়া হাঁকছেন চালকরা।

গণপরিবহন ধর্মঘটে কদর বেড়েছে ভাড়ার মোটরসাইকেলের। ধর্মঘটের প্রভাবে রাজধানীর অধিকাংশ রাস্তা ফাঁকা থাকায় মানুষ ভাড়ার মোটরসাইকেলে যাতায়াত করাকে শ্রেয় ধরে নিচ্ছেন। তাছাড়া ভাড়াও সহনীয় বলে যাত্রীরা জানান।

রাস্তায় নারী, শিক্ষার্থী, বয়স্ক মানুষের চোখে-মুখে বিরক্তির ছাপ। তাদের কষ্টটাও সীমাহীন। আর চাকরিজীবীরা কিছুদূর হেঁটে, অপেক্ষায় থেকে, বিভিন্ন উপায়ে কর্মস্থলের দিকে যাচ্ছেন।

এদিকে অনেককেই পাঠাও, উবার, ওভাই, সহজসহ বিভিন্ন অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবার দিকেও ছুটছে। রাইড শেয়ারগুলোতে অনলাইন শেয়ার না করে চুক্তিতে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রীর জন্য বাইক নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। তারা যাত্রীদের সাথে দরদাম করে বিভিন্ন রুটে যাতায়াত করছে।

সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা ও হত্যা প্রমাণিত হলে ৩০২ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে সংসদে পাস হয় ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’। তবে এই আইন না মানার ঘোষণা দিয়ে আট দফা দাবি উত্থাপন করে ধর্মঘটে নেমেছে শ্রমিক ফেডারেশন। বেশ কয়েকটি পরিবহন মালিক সংগঠন শ্রমিকদের আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে। তারা গাড়ি বের না করার নির্দেশনাও দিয়েছেন।

পরিবহন শ্রমিকদের আট দফা দাবি হলো-

১. সড়ক দুর্ঘটনায় মামলা জামিনযোগ্য করতে হবে;

২. শ্রমিকদের অর্থদণ্ড পাঁচ লাখ টাকা করা যাবে না;

৩. সড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি রাখতে হবে;

৪. ড্রাইভিং লাইসেন্সে শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি করতে হবে;

৫. ওয়েটস্কেলে (ট্রাক ওজন স্কেল) জরিমানা কমানোসহ শাস্তি বাতিল করতে হবে;

৬. সড়কে পুলিশের হয়রানি বন্ধ করতে হবে;

৭. গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের সময় শ্রমিকদের নিয়োগপত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সত্যায়িত স্বাক্ষর থাকার ব্যবস্থা করতে হবে;

৮. সব জেলায় শ্রমিকদের ব্যাপকহারে প্রশিক্ষণ দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করতে হবে এবং লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ করতে হবে।

Bootstrap Image Preview