চেহারা সুন্দর হওয়ায় একের পর এক ছেলেকে বিয়ে

বগুড়ায় প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিয়ে করায় শাপলা আকতার লিলি নামে এক গৃহবধূকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয় তাকে।

গতকাল বুধবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে বগুড়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৪ এর আদালতে পেনাল কোডের ৪৯৪ ধারায় এই রায় ঘোষণা করা হয়। আদালতের বিচারক আছমা মাহমুদ দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির অনুপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত শাপলা আকতার লিলি গাবতলী উপজেলার মহিষাবান গ্রামের আবুল কালামের কন্যা। পূর্বে তার একবার বিয়ে হলেও তা গোপন করে কুমারী সেজে ২য় বিয়ে করে। কিছুদিন পূর্বে দ্বিতীয় স্বামীর মামলায় দুই মাস সাজা ভোগ করার পর জামিনে মুক্ত হন লিলি।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, লিলি বিগত ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর শাজাহানপুর উপজেলার শেরকোল গ্রামের মৃত আফছার আলীর ছেলে রাজু আহম্মেদকে বিয়ে করেন। মাত্র ৫ মাস সংসার করে সে বাবার বাড়িতে চলে যান। এরপর প্রথম বিয়ে গোপন করে কুমারী সেজে ২০১৫ সালের ১ জুলাই গাবতলী উপজেলার ধোড়া গ্রামের আমজাদ হোসেন মোল্লার ছেলে আপেল মাহমুদ রনির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

ঘটনাটি জানতে পেরে লিলির প্রথম স্বামী রাজু আহম্মেদ ৬ জনকে আসামি করে ২০১৫ সালের জুলাই মাসেই আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে গাবতলী মডেল থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর মামলায় সাক্ষী শেষে ৩ বছর পর গত বুধবার বিজ্ঞ আদালত উল্লেখিত রায় প্রদান করেন।

এদিকে ১ম বিবাহ গোপন করে নিজেকে কুমারী সেজে দ্বিতীয় বিয়ে করায় ২য় স্বামী আপেল মাহমুদ রনি বাদী হয়ে লিলির বিরুদ্ধে আদালতে ২০১৫ সালের শেষের দিকে একই ধরনের আরও একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাতেও বাদীর ঘটনা সত্য প্রমাণিত হওয়ায় চলতি বছরের ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি আদালত লিলিকে এক বছর ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। একই সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ওই মামলায় দুই মাস সাজা ভোগ করার পর আপিলে বের হন লিলি।

বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহাদত হোসেন জানান, লিলির বিরুদ্ধে আরও একাধিক বিয়ে করার অভিযোগ আছে। চেহারা সুন্দর হওয়ায় সে একের পর এক ছেলেকে বিয়ে করে দেনমোহর আদায় করে তালাক দেয়। বর্তমানে সে ঢাকার একটি ছেলেকে বিয়ে করে সেখানেই অবস্থান করছেন বলে তারা জানতে পেরেছেন।

এদিকে এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত লিলি ও তার বাবা আবুল কালামের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি তারা।