ফেনীতে ৫ বছরের এক শিশুকে বর্বর নির্যাতনের অভিযোগে অভিনেত্রী শাহানা আক্তার শাহেনীকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে শর্শদী এলাকার একটি জঙ্গল থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। এর আগে তার বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পুলিশ মেয়েটির ওপর নির্যাতনের আলামত খুঁজে পায়। এবং একটি ঘরে কয়েকটি জায়নামাজ (নামাজের বিছানা) দেখতে পায়।
স্থানীয়রা জানায়, পিতা-মাতাহীন প্রিয়াঙ্কা আক্তারকে পালক মেয়ে হিসেবে নিজের কাছে রাখেন এক সময়ের বাংলা সিনেমার অভিনেত্রী শাহানা আক্তার শাহেনী। পালক মেয়ে বললেও শাহেনী প্রিয়াঙ্কাকে দিয়ে ঘরের সব কাজ করাতেন বলে জানা যায়।
স্থানীয়সূত্রে আরও জানা যায়, শাহেনী ঢাকায় অবস্থান করলেও নিয়মিত যাতায়াত করতেন। কিছুদিন আগে প্রিয়াঙ্কাসহ উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের গজারিয়া কান্দি গ্রামের নিজ বাড়িতে আসেন শাহেনী।
প্রতিবেশী জোহরা আক্তার জানান, মঙ্গলবার বিকেলে শাহেনীর বাড়িতে কান্নার শব্দ শুনে স্বামীকে নিয়ে তিনি সেখানে যান। ক্ষত-বিক্ষত প্রিয়াঙ্কাকে উদ্ধার করে তারা প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে আধুনিক ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।
প্রিয়াঙ্কার বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান, সোমবার রাতে শাহেনী লাঠি দিয়ে পেটানোর পর তার শরীর ঝলসে দেয়। পরে তাকে আটকে রেখে বেরিয়ে যায়। এভাবে প্রায়ই তার ওপর নির্যাতন করতো বলে জানায় শিশুটি।
ফেনী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) নাজমুল হাসান বলেন, শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো না। শরীরের বিভিন্ন জায়গা ঝলসে যাওয়ায় ওর কিডনি ঝুঁকিতে রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা অথবা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেয়া দরকার।
শাহেনীকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার। তিনি বলেন, আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে শাহেনী দোষ স্বীকার করে বলেন, তার ওপর জ্বিন ভর করতো সেসময় প্রিয়াঙ্কার শরীরে আগুনের ছ্যাকা দিলে জ্বিন চলে যেত। আর সে কারণেই তাকে তিনি আগুনের ছ্যাকা দিতেন।
তিনি আরো জানান, বাংলা চলচ্চিত্রের ৪৫টি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। বিগত ৪ বছর তিনি অভিনয় থেকে দূরে সরে এসেছেন।