জরিনা বেগম তার মেজ সন্তানকে ফোন করে জানান, কথিত বিকাশ এজেন্ট অফিস থেকে ০১৬৪৪-৩১৫৮৬৬ নাম্বারের মুঠোফোন থেকে বলা হয়েছে দেড় মাসে আগে তার নাম্বারটি বিকাশ করা হয়েছে। এখন দ্রুত পিন নাম্বার না দিলে তারা একাউন্ট বন্ধ করে দিবে। বৃদ্ধা জরিনা বেগম নিজের মোবাইল বন্ধ হওয়ার চিন্তায় সব ছেলেদের কাছে ফোন করে বিষয়টি জানান। ছেলেরা এটি প্রতারকদের কাজ জানালে আশ্বস্ত হন জরিনা।
সদরের বংকিরা গ্রামের সাবেক মেম্বর শহিদুল ইসলাম মনসাদ এমন প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে ৭ হাজার টাকা গচ্চা দেন। প্রতারকরা তার সর্বশেষ লেনদেনের তথ্য চান। তিনি সরল মনে দিয়ে দেন। তারপর মনসাদের একাউন্ট থেকে ৭ হাজার টাকা উধাও হয়ে যায়।
ঝিনাইদহের পিতৃহারা দুই বোন রুমু আর ঝুমু। তারা বিভিন্ন মানুষের দেওয়া টাকায় পড়াশোনা করেন। এক বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছেন। প্রতারকরা বিকাশের লোক পরিচয় দিয়ে ০১৮৩১-৩৭০৬১৭ নাম্বার থেকে ফোন করে তার বড় বোনের কাছে জানতে চায় তাদের পিন নাম্বার। না বুঝেই তিনি পিন নাম্বারটি দিয়ে দেন। এরপরই তাদের একাউন্ট থেকে ৬ হাজার টাকা হাওয়া হয়ে যায়।
এভাবে সারা জেলায় শত শত মানুষ প্রতারণা শিকার হচ্ছেন। লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিকাশ একাউন্ট থেকে। অভিযোগ দিয়ে টাকা ফেরৎ পাওয়া সুযোগ না থাকায় মানুষ দিনকে দিন হতাশ হয়ে পড়ছে।
এদিকে ঝিনাইদহে বিকাশ এ্যাপসের মাধ্যমে প্রতরণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের ৫ সদস্যকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলো-শহরের মহিষাকুন্ডু এলাকার মৃত আকামত মিয়ার ছেলে রাজু আহমেদ (২৯), আর্যনারায়ণপুর গ্রামের মৃত আবুল মন্ডলের ছেলে আকিদুল মন্ডল (২০), হাবিবুর শেখের ছেলে তালিপ শেখ (২০), আল আমিন (২২) ও মৃত সিদ্দিক মন্ডলের ছেলে সাব্বির হোসেন (১৮)।
ঝিনাইদহ গোয়েন্দা পুলিশের ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিকাশ এ্যাপসের মাধ্যমে সহজ-সরল মানুষের কাছ প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে আসছিল।
চক্রটি বিকাশ এ্যাপসে সাধারণ গ্রাহকদের ফোন নম্বর দিয়ে পরে তাদের কাছ থেকে কোড সংগ্রহ করে টাকা হাতিয়ে আসছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।