সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে চার সন্তানের জনক কতৃক মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া ১১ বছরের শিশু কন্যা ধর্ষণের ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও ওই ঘটনায় মামলা নিচ্ছে না থানা পুলিশ। এদিকে ঘটনার পর লোক লজ্জার ভয়ে ওই শিশু কন্যা মাদ্রাসায় আসা যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
অন্যদিকে মামলা না নিয়ে ধর্ষণের মতো ঘটনা টাকার বিনিময়ে সালিসে নিষ্পত্তির জন্য থানা পুলিশের তদন্তকারী অফিসার উল্টো ভিকটিমের পরিবারকে চাঁপ দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
আজ রবিবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে ভিকটিমের মা জানান, ‘অভিযুক্ত মতিউরের ভাই রফিকুল ও তার মা সাবেক ইউপি সদস্য সখিনা বেগমের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নানা অজুহাতে থানার তদন্তকারী অফিসার ঘটনা তদন্তে সরেজমিনেই আসেননি এমনকি অভিযোগটি মামলা হিসাবে রেকর্ডভুক্ত না করে উল্টো টাকা পয়সা নিয়ে সালিসে নিষ্পক্তির জন্য চাঁপ দিয়ে যাচ্ছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘তদন্তকারী অফিসারের গাফিলতির কারণে ঘটনার আলামতই এখন নষ্ট হতে চলেছে পরবর্তীতে এ দায় কে নেবে?’
অভিযুক্তের বড় ভাই রফিকুল ইসলামের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘটনা যা হবার তা তো হয়েই গেছে। আমার ভাই অপরাধ করেছে, এখন চেষ্টা করছি বিষয়টি সামাজিক ভাবে সালিশে মীমাংসার জন্য।’
লিখিত অভিযোগ ও ভিকটিমের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শ্রীপুর (উওর) ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী লাকমা পুর্বপাড়া গ্রামের মৃত হানিফার ছেলে চার সন্তানের জনক মতিউর রহমান (৩৪) একই পাড়ার স্থানীয় মহিলা মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে পড়–য়া ১১ বছরের শিশু কন্যাকে গত ১০ অক্টোবর ট্যাকেরঘাট সীমান্তের মরাটিলায় লাঁকড়ি কুড়াতে গেলে হাত, পা ও মুখ বেঁধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনা চাঁপা দিতে শিশু কন্যাকে হত্যা ও লাশ গুমের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে কাঁধে করে তাকে ভারতের পাহাড়ের গহীনে নিয়ে যাবার পথে ওপারের ভারতীয়দের ধাওয়ার মুখে মতিউর ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে পরিবার ও স্থানীয় লোকজন সন্ধ্যায় টিলা থেকে ওই শিশুকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসলে ধর্ষণ, হত্যা ও লাশ গুমের পরিকল্পনার বিষয়টি জানাজানি হয়। ঘটনাটি রাতেই মুঠোফোনে ভিকটিমের মা তাহিরপুর থানার ওসিকে অবহিত করে পরদিন ১১ অক্টোবর এ ব্যাপারে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের তদন্তভার দেয়া হয় থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আমির উদ্দিনকে। এরপর রহস্যজনক কারণে ঘটনা তদন্তে রবিবার দুপুর পর্যন্ত ওই অফিসার সরেজমিনে আসেনি এমনকি অভিযোগটি মামলা হিসাবে রেকর্ডভুক্ত করেন নি।
তাহিরপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আমির উদ্দিনের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি সালিসের জন্য ভিকটিমের পরিবারকে কোনো ধরণের চাপ দেইনি বরং অভিযুক্তকে গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা করছি।’