কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাত্র ছয় মাস আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় নাসরিনের। কিন্তু একটি মোটরসাইকেলের জন্য হাতের মেহেদির রঙ না মুছতেই নাসরিনকে শ্বশুরবাড়ি থেকে লাশ হয়ে ফিরতে হলো।
নাসরিনের পরিবার জানায়, উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামের নাসির উদ্দিনের মেয়ে নাসরিন খাতুনের (১৮) সঙ্গে ছয় মাস আগে ছেঁউড়িয়া কারিগর পাড়ার আলতাব হোসেনের ছেলে শরিফুলের বিয়ে হয়।
বিয়ের সময় একটি মোটরসাইকেল ও স্বর্ণের চেইন যৌতুক হিসেবে দাবি করেছিল ছেলে পক্ষ। বিয়ের সময় নাসরিনের দরিদ্র বাবা নাসির উদ্দিন জামাইকে স্বর্ণের চেইন দিলেও মোটরসাইকেল কেনে দিতে পারেননি। মোটরসাইকেল দিতে না পারায় প্রায়ই নাসরিনের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাত স্বামী শরিফুল। রোববার সারাদিন নাসরিনকে কিছু খেতে না দিয়ে ঘরে বন্দি করে অমানবিক নির্যাতন করে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মৃত্যুর আগে খাবার ও পানি চেয়েও পায়নি নাসরিন। একপর্যায়ে নাসরিনের মৃত্যু হলে মরদেহ ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পরে নাসরিন আত্মহত্যা করেছে বলে বাবা নাসির উদ্দিনকে খবর দেয় মেয়ের জামাই। খবর পেয়ে নাসরিনের পরিবার ওই বাড়িতে পৌঁছানোর আগেই শরিফুলের পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়।
শরিফুলের প্রতিবেশীরা জানান, নাসরিনকে প্রায়ই নির্যাতন করত স্বামী শরিফুল। গতকালও তাকে নির্যাতন করা হয়। প্রতিবেশীরা ওই বাড়িতে গেলে তাদের বকাঝকা করে তাড়িয়ে দেয় শরিফুলের বাবা-মা। নাসরিনের মৃত্যুর পর পালিয়ে যায় স্বামী শরিফুল এবং তার বাবা-মা।
বাঁধবাজার পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই রেজাউল ইসলাম বলেন, নাসরিনের মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে বুঝা যাবে তাকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমারখালী থানা পুলিশের ওসি আব্দুল খালেক বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। নাসরিনের শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।