Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

৭ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে না ফেরার দেশে খাদিজা

সোহেল আহমেদ, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:২১ PM
আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:২১ PM

bdmorning Image Preview


পারিবারিক কলহের জেরে শ্বাশুরী ও ননদ মিলে ঘরে বেঁধে গৃহবধূ খাদিজা বেমকে (৩০) গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।  পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ঢামেকের বার্ণ ইউনিটে টানা ৭ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে না ফেরার দেশে চলে গেলেন শ্বাশুরী ও ননদের দেয়া আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ খাদিজা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢামেক বার্ণ ইউনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। গৃহবধূর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুবকর মিয়া ও নিহতের স্বামী নবীন প্রধান (৪০)।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, খাদিজার স্বামী উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের উত্তর খৈকড়া গ্রামের মৃত মনরউদ্দিনের ছেলে পেশায় রিকসা চালক। তিন সন্তানের মধ্যে মেয়ে বৃষ্টি (১১) স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে, মেঘলা (৯) ও ছেলে রিফাত (৮) দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ১৬ বছর পূর্বে পার্শ্ববর্তী পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল করতেতুল গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের মেয়ের সাথে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নানা বিষয় নিয়ে শ্বাশুরী ও দুই ননদ মিলে প্রায়ই নির্যাতন করতো। ননদ সাফিয়া স্বামী নিয়ে বাবার বাড়িতেই থাকত। অপর ননদ আরেফার বিয়ে হলেও স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় মায়ের সাথে বাবার বাড়িতেই থাকত।

সূত্র আরো জানান, গত শুক্রবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে গৃহবধূ খাদিজার সাথে শ্বাশুরী ও দুই ননদের ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে শ্বাশুরী ও ননদ মিলে ঘরে আটকে বেঁধে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। এ সময় তার তিন সন্তান মায়ের ডাক চিৎকারে ছুটে আসলে এই অবস্থা দেখে তারা ডাক চিৎকার শুরু করে। পরে প্রতিবেশীরা এসে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তারপর সেখান থেকে ঢামেকের বার্ণ ইউনিটে পাঠায়। সেখানে টানা ৭ দিন মৃত্যু যন্ত্রনা ভোগে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে মারা যান।

প্রতিবেশী মোকতেজা, ইতি ও রাশিদা জানান, ঘটনার পর বৃষ্টি, মেঘলা ও রিফাতের ডাক চিৎকারে এগিয়ে এসে খাজিদাকে উদ্ধার করেন। তবে ওই সময় শ্বাশুরী মনোয়ারা, ননদ সাফিয়া ও আরেফা দাঁড়িয়ে ছিল কিন্তু উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি।

বক্তারপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার আছমত আলী জানান, ঘটনার পর আহত খাজিদা ও তার সন্তানদের সাথে কথা বলেছি। তারা শ্বাশুরী ও দুই ননদের প্রতি অভিযোগ করেছে। ওই ঘটনার পর থেকে শ্বাশুরী ও ননদ দ্বয় পলাতক রয়েছে।

অফিসার ইনচার্জ মো. আবুবকর মিয়া জানান, ঘটনার পর ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষে থানায় কেউ অভিযোগ না করলেও ঘটানাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। সে সময় ভূক্তভোগী পরিবারকে থানায় অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দেওয়া হলেও অভিযোগ করেনি। শুনেছি অগ্নিদগ্ধ ওই গৃহবধূ ঢামেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ ব্যাপারে অভিযোগ দিলে হত্যা মামলা হবে বলেও জানান ওসি। 

Bootstrap Image Preview