Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

শুরু হল গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব-২০১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬ অক্টোবর ২০১৮, ০২:১৭ PM
আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:৫৩ PM

bdmorning Image Preview


গঙ্গা- যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৮ এর সপ্তম আসরের উদ্বোধন করেছেন ভারত ও বাংলাদেশের বিশিস্ট নাট্যজন শ্রী বিভাস চক্রবর্তী ও মামুনুর রশিদ। ৫ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ১১ দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানটি চলবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে প্রতিদিন বিকেল ৪ টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।

“বিশ্ব মানব হবি যদি কায়মনে বাঙালি হ”, কবি গুরুসদয়ের এই পঙ্কক্তি স্মরণ করিয়ে, নান্দনিক প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে গতকাল শুক্রবার (৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে গঙ্গা- যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৮ এর সপ্তম আসরের দ্বার সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেন গঙ্গা- যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবের আহ্বায়ক এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ।

তিনি জানান, এই বছর ৯৬ টি নাট্যদলের অংশগ্রহণে ১১ দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করবে প্রায় তিন শতাধিক সংস্কৃতি কর্মী। সহযোগিতা এবং অর্থায়নে সাথে থাকছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফাউনডেসন এবং মারকেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড।

উৎসবটির উদ্বোধন করেছেন ভারত ও বাংলাদেশের বিশিস্ট নাট্যজন শ্রী বিভাস চক্রবর্তী ও মামুনুর রশিদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূ্র।

আসাদুজ্জামান নূ্র বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের আত্মার এক গভীর ও অভিন্ন বন্ধন রয়েছে। এ বন্ধন শুধু ভাষা নয় বরং সংস্কৃতিরও। এ বন্ধন অভিন্ন বাঙালি সংস্কৃতির মেলবন্ধন। দুই বাংলার সংস্কৃতির শেকড় একই জায়গায়। পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে গিয়েই এই অভিন্ন জাতি পারস্পরের জন্য টান অনুভব করে।'

তিনি আরও বলেন, 'এই বছর এটি শুধু নাট্যোৎসবের পরিসরে থেমে নেই বরং পরিনত হয়েছে একটি সাংস্কৃতিক উৎসবে। যার মাধ্যমে কেবল নাটক নয়, সংস্কৃতির অন্যান্য উপাদানগুলো যেমনগনসংগীত, আবৃত্তি, নৃত্য, যাত্রা, শিশুতোষ পরিবেশনা প্রভৃতিরআদান-প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছেদুই বাংলার মধ্যে। এভাবে দুই বাংলার সংস্কৃতি আরও সমৃদ্ধ, সুদৃঢ় ও বিকশিত হবে।'

উদ্বোধনী পর্বে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মঞ্চসারথি আতাউর রহমান, নাট্যজন নাসির উদ্দিন ইউসুফ, লিয়াকত আলী লাকির এবং অনুষ্ঠানটি দক্ষতার সাথে সঞ্চালন করেন উৎসব প্রচার উপ পর্ষদের আহ্বায়ক নাট্যজন মীর জাহিদ হাসান। প্রথমেই, গঙ্গা- যমুনা নাট্য পর্ষদের সদস্য সচিব আকতারুজ্জামান, নাট্যজন আহমেদ গিয়াস এবং খোরশেদুল আলম উপস্থিত অতিথিদের উত্তরীয় দিয়ে বরন করে মঞ্চে নিয়ে যান।

অমলেশ চক্রবর্তীর একটি চিঠির মধ্যে দিয়ে নাট্যজন মামুনুর রশিদ সকলকে স্মরণ করিয়ে দেন কিভাবে উৎসবটির যাত্রা শুরু হয়। বাংলা সংস্কৃতির প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা থেকেই দুই বাংলাকে এক করার এই প্রয়াস গ্রহন করেছিলেন তিনি। দেশ বিভাগ এবং দেশান্তর হওয়ার কষ্ট, উদ্বাস্তু হবার বেদনা এবং ধর্মের নোংরা রাজনীতি থেকে কিছু সময়ের জন্য দূরে থাকার সুযোগ দেয় এই ধরনের সাংস্কৃতিক পদক্ষেপগুলো।

শ্রী বিভাস চক্রবর্তী বলেন, '১৯৭৪ সালে প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুরনো বাংলা একাডেমীর প্রাঙ্গণে পশ্চিমবঙ্গ এবংবাংলাদেশের শিল্পীদের নিয়ে একটি মহান সাংস্কৃতিক আয়োজন করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল সংস্কৃতির দিক দিয়ে দুই বাংলাকে এক করা। দুই বাংলার মানুষের মাঝে সেই ইচ্ছাটা প্রবল থাকলেও মাঝপথে অনেক বাধা বিঘ্নের কারণে প্রাতিষ্ঠানিক ও রাষ্ট্রীয় স্তরে তা খুব একটা এগিয়ে নেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু পৃথিবীর ইতিহাসে এই বঙ্গভাষা এবং জাতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে এই এক থাকার যুদ্ধটা আমাদের করে যেতেই হবে।'

অনুষ্ঠানের শেষে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ এবং সাংস্কৃতিক পৃষ্ঠপোষকদের হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন গঙ্গা- যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবের আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছ। উদ্বোধনী দিনে জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে ভারতের ড্যান্সার্স গিল্ড পরিবেশন করে জোনাকি সরকারের নির্দেশনায় ও ড. মঞ্জুশ্রী চাকির নৃত্য পরিচালনায় নৃত্যনাট্য ‘তোমারই মাটির কন্যা’।

আজ সন্ধ্যায় একাডেমির মূল হলে মঞ্চস্থ হবে নাটক অণীক, ভারতের ‘বিষঘুম’ এবং এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হবে ‘মেরাজ ফকিরের মা।'

Bootstrap Image Preview