কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি। আগের দিনে ধান থেকে চাউল বের করার একমাত্র যন্ত্র ছিল ঢেঁকি। গ্রামগঞ্জের প্রায় বাড়িতেই ঢেঁকি দেখা গেছে। বর্তমানে কলের মেশিন ও মটরের পদ্ধতি ব্যবহার করার কারণে ঢেঁকি দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার কয়েকজন বৃদ্ধ কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় দেড় যুগ আগেও এই উপজেলার প্রতিটি বাড়িতে ঢেঁকি ছিলো। কৃষক-কৃষানীরা হাত-পায়ের সাহায্যে ঢেঁকিতে ধান ভাঙিয়ে চাউল বের করে ভাত রান্না করতো। ঢেঁকিতে চাউল গুড়ো করে পিঠা তৈরি করতো।
আবার দরিদ্র কৃষকরা গম ভাঙ্গিয়ে গমের ভাত রান্না করে খেত। এসব কাজ বেশির ভাগ করতো মহিলারা। প্রায় সকাল বেলা শোনা যেত ঢেঁকির শব্দ। কারো বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন বেড়াতে আসলে পিঠা তৈরি করার জন্য কয়েকজন মহিলা মিলে ঢেঁকিতে চাউল ভাঙানো নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তো। যদিও ধান থেকে চাউল এবং চাউল থেকে গুড়া বের করতে বেশ সময় লাগতো। তারপরও তাদের মধ্যে থাকতো অন্যরকম আনন্দ।
মাজু খাতুন নামে এক বৃদ্ধা জানান, বর্তমানে কলের মেশিন ও মটরের সাহায্যে দ্রুত ধান ভাঙিয়ে চাউল বের করা হয়। এখনও যেসব বাড়িতে ঢেঁকি রয়েছে, সেই সব বাড়িতে মাঝে মধ্যে চাউল ভাঙানোর ভীড় পড়ে যায়। কারণ মেশিনে ভাঙানো চাউলের গুড়া দিয়ে সব ধরনের পিঠা তৈরি করা সম্ভব নয়। আর ঢেঁকিতে ভাঙানো চাউলের গুড়া দিয়ে হরেক রকম পিঠা তৈরি করা যায় বলে । আজ কলের মেশিন ও মটরের পদ্ধতি ব্যবহার করার কারণে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে।