Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

টয়লেটের গোপন পথ দিয়েই খদ্দেরের কাছে সাপ্লাই করা হত নারী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৭:২৩ PM
আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:৪৭ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


নারীদের দিয়ে দেহব্যবসায় বাধ্য করানোর অভিযোগে কক্সবাজার শহরের পাঁচতারা ও মেঘালয় আবাসিক নামে দুই হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় ১২ নারীসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজীব চন্দ্র পোদ্দার বাদী হয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে এ মামলা করেন। নথিভূক্ত হওয়া মামলায় (নম্বর-১০৩/২০১৮) অভিযুক্ত ১৭ জন গ্রেফতার হলেও হোটেল মালিকদ্বয় পলাতক রয়েছেন।

মামলার আর্জিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অপরাধ দমনে শহরে নিয়মিত বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। এরই জের ধরে ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সদর থানার পৃথক কয়েকটা টিম শহরে অভিযানে নামে। দীর্ঘদিন ধরে পতিতাবৃত্তির অভিযোগ থাকা লালদিঘীর পাড়ের পাঁচতারা হোটেল ও কলাতলীর কটেজ জোনের মেঘালয় হোটেলে নারী রাখার খবর পায় পুলিশ। প্রথমে হোটেল পাঁচতারায় অভিযান চালিয়ে ৬ নারী ও ২ পুরুষকে আটক করা হয়। এ সময় ২০০টি কনডমও জব্দ করে অভিযানকারীরা। অপরদিকে, মেঘালয় হোটেলে অভিযান চালিয়ে ৭ নারী ও ৩ পুরুষকে আটক করে পুলিশ। সেখান থেকে জব্দ করা হয় ৪১০টি কনডম।

আরও উল্লেখ করা হয়, পলাতক আসামি রজমান আলী সিকদার তার মালিকানাধীন পাঁচ তারা হোটেলটি মিনি পতিতালয় বানিয়ে নারী রেখে অবাধে পতিতাবৃত্তি চালিয়ে আসছেন। একই ভাবে ঢাকা, কুমিল্লা ও রামুর কয়েকজনরে সহযোগিতায় কলাতলীর মেঘালয় হোটেলকেও মিনি পতিতালয় বানিয়েছে ভাড়াটিয়া ইউসূফ। তাদের বিরুদ্ধে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ২০১২ এর ১২/১৩ ধারার অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার বাদী এসআই রাজীব চন্দ্র পোদ্দার বলেন, হোটেলের অফিসের টয়লেটের ভেতর বাড়ির সঙ্গে একটি গোপন পথ পাওয়া গেছে। বাড়িতেই নারী রেখে গোপন পথ দিয়েই খদ্দেরের কাছে সাপ্লাই করা হয় বলে প্রমাণ মিলেছে। এটা ছাড়াও আরও কয়েকটি গোপন পথ রয়েছে বলে খবর পেয়েছি।

মামলাটি সম্পর্কে কক্সবাজার জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বলেন, রমজান সিকদারের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো পুরনো। এটি তাদের পরিবারের পুরনো ব্যবসা। সাম্প্রতিক মামলার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এটি আমাদের জন্য বিব্রতকর। ডকুমেন্টগুলো একত্র করে ঢাকায় পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে পাঁচতারা হোটেলের মালিক রমজান আলী সিকদারের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

তবে, জেলা যুবজোটের সাধারণ সম্পাদক অজিত কুমার হিমুর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মামলাটি ষড়যন্ত্রমূলক উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের দাবি করা হয়েছে।

গ্রেফতাররা হলেন, কুমিল্লার দেবিদ্বার ধামতলীর শামসুল হক চৌধুরীর ছেলে আলাউদ্দিন চৌধুরী, কক্সবাজারের রামুর শ্রীমুরার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে নুরুল আজিম, কুমিল্লার দাউদকান্দির বেকিনগর এলাকার মৃত রুস্তম আলী বেপারির ছেলে আবু সাহিদ, গাজিপুরের পুবাইল এলাকার আলী আকবরের ছেলে মোহাম্মদ আতিক, চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার সালাহউদ্দিন, মহেশখালীর নদী, রামুর সুমি, আমিনা, বাঁশখালীর লিজা, লহ্মীপুরের মায়া, ধানমন্ডির সাবিনা, চাঁদপুরের স্বপ্না, বান্দরবানের মিনু, কুমিল্লার রায়পুরের রাবেয়া, টেকনাফের ইয়াসমিন, গাজীপুরের তন্নি ও রাজশাহীর লিমা।

মামলায় পলাতক আসামিরা হলেন, কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর দক্ষিণপাড়ের পাঁচতারা হোটেলের মালিক ও জাসদের সহযোগী সংগঠন যুবজোট কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক, কক্সবাজার জেলা সভাপতি রমজান আলী সিকদার এবং কলাতলী কটেজ জোনের মেঘালয় আবাসিক হোটেলের ভাড়াটিয়া মালিক কক্সবাজার পৌরসভার লাইট হাউসপাড়ার ইউসুফ।

Bootstrap Image Preview