বাংলাদেশে পর্যটনকেন্দ্রের কমতি নেই। কমতি রয়েছে সেফটি এবং সিকিউরিটির। রয়েছে নিরাপত্তার অভাব। তাছাড়া বিনোদনের ও কোনো সুযোগ নেই। এসব কারণে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প খানিকটা পিছিয়ে রয়েছে। অথচ বিশ্বের অন্যান্য দেশের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।
আজ শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ট্যুরিজম ফেস্টের দ্বিতীয় দিনের এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারী একাধিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ম্যানেজার কমার্শিয়াল খন্দকার কামরুল হক বিডিমর্নিং কে বলেন, ‘বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারে প্রতিবছর বহু পর্যটক আসে। তবে এখানে এসে তারা দিনে সমুদ্র সৈকত দেখে আনন্দ ভোগ করতে পারলেও রাতে তাদের করার কিছু থাকে না। অথচ বিশ্বের অন্যান্য দেশের সি-বিচগুলোতে অবস্থা কিন্তু ভিন্ন। সেখানে দেখা যায় রাতে বিভিন্ন সেমিনারের আয়োজন করা হয়, বা গান বাজনার আয়োজন থাকে মোট কথা পর্যটকদের বিনোদন দিতে তারা কোনো প্রকার কমতি রাখে না।’
খন্দকার কামরুল হক আরও বলেন, ‘আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে সুযোগ সুবিধা যা আমাদের দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোত অভাব দেখা যায়। যেমন কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের আয়তায় টয়লেট বা চেঞ্জিং রুমের অভাব রয়েছে। ফলে সমুদ্র থেকে উঠে এই ভেজা কাপড় নিয়েই তাদের হোটেলে ফিরতে হয়। অথচ আমাদের প্বার্শবর্তী দেশ গুলোতে দেখা যায় বিচের ভেতরই সাড়ি বেধে রয়েছে টয়লেট বা চেঞ্জিং রুম। এতে পর্যটকদের এ ভোগান্তির মধ্যে পরতে হয় না।’
এদিকে নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘ট্যুরিস্ট পুলিশ রয়েছে ঠিকই তবে রাত হলেই দেখা যায় না তাদের। তাই নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পরে যায় পর্যটকরা। রেস্কিউ টিমের যতটুকু প্রয়োজন সেইভাবে মিলেনা তাদের সান্নিধ্য। সুতরাং এসব বিষয়ে নজর দেয়া উচিৎ।’
এদিকে পর্যটন শিল্পকে উন্নত করার লক্ষ্যে আয়োজিত ‘ট্যুরিজম ফেস্ট’ সম্পর্কে টোয়াবের অ্যাডমিন এন্ড একাউন্টস কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বিডিমর্নিং কে বলেন, ‘দেশের পর্যটন শিল্পকে উন্নত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কাজ করা হচ্ছে, তারই অংশবিশেষ এই ‘ট্যুরিজম ফেস্ট’। টোয়াব দীর্ঘ ২৫ বছরের উর্ধে এই খাতে কাজ করে যাচ্ছে। সকল সমস্যা চিহ্নিত করে উত্থাপন করা হচ্ছে মন্ত্রণালয়সমূহে। ফলে সমস্যার সমাধানও হচ্ছে। আশা করা যায় এভাবে আমাদের দেশের পর্যটন শিল্প অতিদ্রুত ডেভেলপ করবে।’
কথা হয় ‘ট্যুরিজম ফেস্ট’ এর আয়োজক সংস্থা বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের এক কর্মকর্তার সাথে। তিনি বিডিমর্নিং কে বলেন, ‘বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উদ্যোগে প্রায়ই এমন আয়োজন করা হয়। এধরনের আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করা। বিদেশী পর্যটকদের পাশাপাশি দেশীয় পর্যটকদেরকে উদ্বুদ্ধ করা হয়। আমাদের দেশেরই অনেক নাগরীক আছেন যাদেরকে জিজ্ঞেস করা হলে বলতে পারবেন না কুয়াকাটা দেশের কোন অঞ্চলে। তাই দেশি-বিদেশি সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে আমরা একযোগে কাজ করি। দেশের পর্যটন শিল্পকে উন্নত করতে এমন আয়োজনের বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডসহ বিভিন্ন পর্যটন সংস্থা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এমনই এক অনুষ্ঠান রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে শুরু হয়েছে। তিন দিনব্যাপী চলছে এ ‘ট্যুরিজম ফেস্ট ২০১৮’।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হয় এ অনুষ্ঠানের। অনুষ্ঠানটি ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে হবে। উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন বিকেল ৫টায় রয়েছে বর্ণিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে আদিবাসী ও ফোক নৃত্যের পাশাপাশি থাকছে লালন, বাউল ও জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীদের পরিবেশনা। উৎসবস্থলে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করবে।