Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল ভরাট, দখল ও দূষণমুক্ত করতে হবে: পবা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৭:২৮ PM
আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৭:২৮ PM

bdmorning Image Preview


বেপরোয়া দখল, ভরাট এবং ক্রমবর্ধমান দূষণ ও অব্যাহত আগ্রাসনের ফলে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল এখন মৃত প্রায়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও মহামান্য হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও ঢাকার প্রাণস্বরূপ বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল পুণরুদ্ধারে বিভিন্ন সময়ে বিচ্ছিন্ন কিছু উচ্ছেদ অভিযান ছাড়া আর কিছু হয়নি। যা আদি চ্যানেল উদ্ধারে কোন কাজে আসেনি।

মহানগরী ঢাকার জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বুড়িগঙ্গার এই আদি চ্যানেলের সরকারি বেসরকারি সকল দখল অবিলম্বে উচ্ছেদ করে বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল পুণরুদ্ধার করা হোক।

আজ শুক্রবার, সকাল সাড়ে ১০টায় পুরানঢাকাস্থ নবাবগঞ্জ পার্ক সংলগ্ন বেরিবাঁধে, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ)-সহ মোট ১৩টি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে ‘বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল ভরাট, দখল ও দূষণমুক্ত কর’-দাবিতে মানববন্ধনে বক্তারা উক্ত দাবি জানান।

নাসফ-এর সাধারণসম্পাদক মো: তৈয়ব আলীর সভাপতিত্বে উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পবার সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চে’র সভাপতি আমির হাসান মাসুদ, বানিপা’র সভাপতি প্রকৌ. মো. আনোয়ার হোসেন, সুবন্ধন সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি মো: হাবিবুর রহমান, সচেতন নগরবাসী সংগঠনের সভাপতি জি এম রোস্তম খান, নাসফ-এর সাংগঠনিক সম্পাদক অহিদুর রহমান, সহ-সম্পাদক অলিভা পারভীন, বাংলাদেশ সাইক্লিং ও হাঁটা জোট-এর নির্বাহী সদস্য মো. নিশু সাদেক, স্বপ্নের সিঁড়ি সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি উম্মে সালমা, পশ্চিম রসুলপুর ওয়েল ফেয়ার সোসাইটির সহ-সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম মাতিন, অরুনোদয়ের তরুণ দল-এর সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবু, বাংলাদেশ যুব সমিতির সভাপতি মো. আকতার হোসেন, ঘাদানিক-এর সমন্বয়ক মো. আব্দুল্লাহ, পবা’র সদস্য এলিজা রহমান, গ্রীণ ফোর্সের সদস্য মো. মেহেদী, মো. কামরুজ্জামান, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চের সদস্য মুহাম্মদ ফারুক হোসেন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল দখল-দূষণ ও হুমকির মুখে। জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা, ঢাকার নদ-নদীর পানির স্বাভাবিক গুণাগুণ ও পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে হবে। অপরিকল্পিত ও অনুনোমোদিত বাড়ি-ঘর নির্মাণসহ শিল্পবর্জ্যরে শোধনাগার না থাকায় ভরাট, দখল ও দূষণের মহোৎসব চলছে। দখল-ভরাট ও দূষণরোধে প্রধানমন্ত্রীসহ মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও তা উপেক্ষিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি কুড়িল ফ্লাইওভার এলাকায় দুটি লেক খনন করে নদীর সাথে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।

অন্যদিকে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল সংলগ্ন ঢাকার পশ্চিমাঞ্চলের এলাকার খালগুলোও এখন মরতে বসেছে। ফলে বর্ষার সময় এই এলাকা সামান্য বৃষ্টিতেই ভয়াবহ জলাবদ্ধতার মুখে পড়ে অনেক ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। মহানগরীর পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে স্থানীয় জনসাধারণ, মহানগরবাসী, পরিবেশ বিশেষজ্ঞসহ সুশীল সমাজ দখলের এই জঘন্য প্রতিযোগিতা বন্ধে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে আসছেন।

মানববন্ধন থেকে নিন্মোক্ত দাবি জানানো হয়-

১. বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল দখল ভরাট করে নির্মাণকৃত কারখানা ও বাড়িঘরের পানি বিদ্যুৎ গ্যাসসহ সকল নাগরিক সুযোগ এখনই বন্ধ করে দেয়া এবং অবিলম্বে সকল দখল ও ভরাট এবং দূষণমুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

২. সিএস রের্কড অনুযায়ী বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের সিমানা নির্ধারণ করে স্থায়ী পিলার স্থাপন করা।

৩. বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলে প্রদত্ত ভূমি বরাদ্দসমূহ সরকার কর্তৃক অনতিবিলম্বে বাতিল করা।

৪. ব্যক্তি ও সংস্থার নামে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের রেকর্ডসমূহ আইন বহির্ভূত ঘোষণা করে সেগুলো বাতিল করা।

৫. খনন করে আদি চ্যানেলের গতি প্রবাহ পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা।

৬. নদী দূষণমুক্ত করার লক্ষে পয়ঃবর্জ্য পরিশোধানাগার স্থাপন; গৃহস্থালী বর্জ্য পানি প্রবাহে ফেলা থেকে বিরত থাকা; অবশিষ্ট ট্যানারীগুলো জরুরীভিত্তিতে স্থানান্তর এবং বর্জ্য পরিশোধনাগার স্থাপন ও বর্জ্য পরিশোধন করা; শিল্পকারখানায় বর্জ্য পরিশোনাগার স্থাপন এবং নিয়মিত তা পরিচালনা করা, নৌযানের বর্জ্য ও তেল নদীতে ফেলা থেকে বিরত থাকা।

Bootstrap Image Preview