Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

রাণীনগরে শ্রেণিকক্ষ সংকটে মাদুর বিছিয়ে পাঠদান

আবু ইউসুফ
প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০২:৪৭ PM
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০২:৪৭ PM

bdmorning Image Preview


আবু ইউসুফ, রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

রাণীনগর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত খাস পারইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নানান সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। আশানুরুপ সংখ্যায় ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত থাকলেও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বসার পর্যাপ্ত বেঞ্চ, শ্রেণিকক্ষের সংকট, কক্ষে বৈদ্যুতিক ফ্যানসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে এই বিদ্যালয়টি।

শিক্ষার মান ধরে রাখতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলীরা শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের জায়গা না হওয়ায় অনেকটা বাধ্য হয়েই বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে শিক্ষার্থীদের সাড়িবদ্ধ ভাবে বসিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

ইতিমধ্যে যে ভবনগুলো রয়েছে সেগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় নানান আতংকে শিক্ষকসহ ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে বিপাকে রয়েছে। দুই এক জায়গায় ফাটল ধরার কারণে যেকোন সময় ভবন ধসে প্রাণহানীর মত ঘটনা ঘটার আশংকা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বারবার জানানোর পরও এখন কোন নতুন ভবন নিমার্ণ বা সংস্কারের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি চোখে পড়ছে না।

জানা গেছে, উপজেলার পারইল ইউনিয়নের পারইল গ্রামে অবস্থিত খাস পারইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৮০ সালে স্থানীয় কিছু শিক্ষানুরাগী তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৩ শতাংশ জমি কিনে স্থাপন করেন। ২০১২ সালে বিদ্যালয়টি রেজিস্টার্ড হলেও প্রায় ৬ বছর অতিবাহিত হলেও সরকারি বরাদ্দকৃত কোন ভবন এই বিদ্যালয়টি এখনও পায়নি। শ্রেনিকক্ষ সংকটের কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোমলমতি শিশুদের বিদ্যালয়ের বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে পাঠদান করাতে বাধ্য হচ্ছেন। তিন কক্ষ বিশিষ্ট পুরাতন ভবনে প্রতিদিন বিদ্যালয়ের প্রায় ১৫৬ জন শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করে। প্রতিটি কক্ষে চারটি করে ফ্যান থাকার কথা থাকলেও রয়েছে একটি করে। তাই প্রচন্ড গরমে গাদাগাদি করে শিশুদের বসানোর কারণে পাঠদানের সময় অনেকেই অসুস্থ্ হয়ে পড়ে।

অভিভাবক সমিতা রাণী পালসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আমাদের এই বিদ্যালয়টি অনেক সমস্যায় জর্জরিত। পুরাতন ভবনের কারণে আমরা সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর পর আতংকেই থাকি। শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষা গ্রহণ করে। বিদ্যালয়টির উপযুক্ত পরিমাণ জায়গা থাকলেও সরকারি বরাদ্দে নতুন ভবন না পাওয়ায় শ্রেণিকক্ষ সংকটে রয়েছে বিদ্যালয়টি। তাই সরকার যদি একটি আধুনিক মানসম্মত নতুন ভবন নির্মাণ করে দিতো তাহলে বারান্দায় মাদুরে বসে আমাদের সন্তানদের আর শিক্ষা গ্রহণ করতে হতো না।

প্রধান শিক্ষক শেফালী বেগম বলেন, এলাকার অনেক মানুষ বিদ্যালয়ের এমন অবস্থা দেখে তাদের সন্তানকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করায় না। বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকটসহ রয়েছে বেঞ্চের সংকট, জরুরি কাগজপত্র রাখার জন্য নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ আসবাবপত্র।

খাস পারইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ আনছার আলী বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের নিজস্ব কোন তহবিল নেই। নানান অবকাঠমো সংকটের কারণে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষা কার্যক্রম কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই আমরা এলাকাবাসী মিলে যতটুকু করতে পারি বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য করছি। তারপরও সরকারি নতুন ভবনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেলে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান আরো বৃদ্ধি পাবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: আতোয়ার রহমান জানান, ওই বিদ্যালয়ে অবকাঠমোগত অনেক সমস্যা রয়েছে। শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য বিদ্যালয়ের যাবতীয় সমস্যা চিহ্নিত করে ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর জানানো হয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Bootstrap Image Preview