পরিবারের নিষেধের পরেও প্রেম করায় মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন। পরিবারের সম্মান রক্ষায় এমন নৃশংস কাণ্ড ঘটালেন জন্মদাতা পিতা ও বড় ভাই।ট্রাকের মধ্যে গলায় নাইলনের দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে তারা।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কলকাতায়।
নিহত ওই তরুণীর নাম জাহানা খাতুন (২৫)। তার বাড়ি বিহারের মুজফ্ফরপুরের চকআলহাদাদ এলাকায়। কলকাতায় বেনিয়াপুকুর এলাকায়ও তাদের বাড়ি আছে।
এ ঘটনায় মেয়ের বাবা ও ভাইকে কলকাতার বেনিয়াপুকুর এলাকার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার আটককৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
ভারতের এক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, জাহানা খাতুনকে হত্যার পর তার লাশ ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় বাবা মহম্মদ মুস্তাফা ও বড় ভাই মহম্মদ জাহিদ। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। নিহত তরুণীকে উদ্ধার করে তার ঊরুতে মেহেদি দিয়ে লেখা ফোন নম্বর থেকে খুনের কিনারা করে জামালপুর থানার পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ৩১ আগস্ট সকালে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে জামালপুর থানার নবগ্রামের ময়না এলাকা থেকে এক অপরিচিত তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতার দুই ঊরুতে লেখা চারটি ফোন নম্বর এবং ‘করণ’ নামে এক যুবকের নাম পাওয়া যায়।
সেই মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পৌঁছে যায় মহারাষ্ট্রে করণ কুমারের কাছে। সেখানে ওই যুবক জরির কাজ করেন। পুলিশ তার কাছ থেকেই যুবতীর নাম ও ঠিকানা পায়।
তদন্তে জানা যায়, জাহানার সঙ্গে করণের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি তার বাবা মহম্মদ মুস্তাফা। তাই সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য জাহানাকে তার মাসির বাড়িতে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। এতেও তাদের ভালোবাসা আটকাতে না পেরে ২৯ আগস্ট বিহার থেকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয় জাহানাকে। সেখানে তার বাবা ও বড় ভাই লরির ব্যবসা করতেন। তারা জাহানার হাত–মুখ বেঁধে সেই লরিতেই চাপিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে ৩০ আগস্ট রাতে কলকাতা থেকে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে পূর্ব বর্ধমানের দিকে আসে। পথে জামালপুরের নবগ্রামের কাছে তাকে পেছন থেকে নাইলনের দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়।
পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাথায় ভারি বস্তু দিয়ে আঘাতও করা হয়। মৃত্যুর পর জাহানার মৃতদেহ জাতীয় সড়কের পাশে ফেলে পালিয়ে যায় তার বাবা ও দাদা।